শিবপুরের বোটানিক্যাল গার্ডেনে এই ফুলটির চলতি নাম সেতবা। ভালো নাম স্বর্গের পদ্ম (Heaven lotus).
আর, বৈজ্ঞানিক নাম Gustavia augusta.
তৃতীয় গুস্তাভাস (Gustavus III) ছিলেন সুইডেনের এক রাজা। এক রক্তক্ষয়ী বিদ্রোহে জয়ী হয়ে ১৭৭১ সালে তিনি রাজা হন। রাজতন্ত্রের বহু কুফল দমন করে তিনি জনপ্রিয় হয়েছিলেন। ১৭৯২ সালে গুপ্ত ঘাতকের হাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
সেই গুস্তাভাস আবার ছিলেন একজন পুষ্পপ্রেমী। তাঁর মৃত্যুর পর এই গাছটি তাঁর নামে নামকরণ করা হয়।
বোটানিক্যাল গার্ডেনে Anderson Avenue ও Dyer Avenue এ এই গাছ কয়েকটি আছে। এখন ফুলের সময় নয়, তবু গাছটিতে অনেক ফুল ফুটেছে।
আবহাওয়ার কি সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে তা বলার নয়। এই ভরা বর্ষায় বাগানে গাছ ভরে বসন্তের হলুদ ফুল টাবেবুইয়া ক্রিসন্ন্থা ফুটেছে। ফুল দেখে আমার একটুও আনন্দ হয়নি, দুর্ভাবনায় মন অস্থির হয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় কবে যে আমরা সচেতন হবো!
সে যাক। গুস্তাভিয়ার কথা বলি।
এই ফুল অগ্রমুকুলে যেমন হয়, তেমনি মোটা কাণ্ডের গায়েও হয় থোকা হয়ে।
বাগানে আরো দুইরকমের গুস্তাভিয়া আছে, গ্রাসিলিস ও ইনসিগনিস।
গুস্তাভিয়া সুগান্ধী ফুল। এর পাপড়ির বিন্যাস অনেকটা উদয় পদ্মের মতো। ফুলের সাতটি/আটটি পাপড়ির চারটি/পাঁচটি নীচে ও তিনটি উপরের দিকে থাকে। উপরের পাপড়িগুলি ফুলের কেন্দ্রে ফুলের গর্ভকে রক্ষা করে। মৌমাছি ও অন্য পতঙ্গে এর পরাগমিলন হয়।
আগে কোনোদিন এই ফুল স্পর্শ করে দেখিনি। আজ গোটা গোটা ফুল ঝরে পড়ে আছে দেখে কুড়িয়ে নিলাম। এর কেশরগুলি যিনি স্পর্শ করেননি, তাঁকে বোঝানো যাবেনা সেই অপূর্ব কোমল, পেলব অনুভূতি।
একবার ঝরে পড়া বাওবাবের পরিণত কুঁড়ি উন্মোচন করেছিলাম। সেই অনুভূতির কোনো তুলনা হয়না। গুস্তাভিয়া তার তুলনায় অনেক ছোট ফুল, কিন্তু সেই আশ্চর্য অনুভূতি এতেও যেন কিছুটা পেলাম।
গুস্তাভিয়ার ফল বেশ বড়, হাতের তালু ভরে যায়। সেই ফলের বীজ থেকে গাছ হয়।
চিরহরিৎ এই গাছগুলি গুল্ম, উচ্চতা বেশি হয় না।
লম্বাটে গাঢ় সবুজ রঙের পাতা। শাখার আগায় থোকা (rosettes) হয়ে বাদামি রঙের কচি পাতা জন্মায়।
Comments
Post a Comment