Skip to main content

কুঞ্জলতা




|| কুঞ্জলতা ||
অন্যান্য নাম : কুঞ্জলতা, কামলতা, তারালতা, তরুলতা, গেইট লতা, সূর্যকান্তি, জয়ন্তী ফুল।
ইংরেজি নাম : Cypress Vine, Cypressvine Morning Glory, Cardinal Creeper, Cardinal Climber, Cardinal Vine, Star Glory, Hummingbird Vine, Cupid's flower
বৈজ্ঞানিক নাম : Ipomoea quamoclit
কুঞ্জলতা একপ্রকার বর্ষজীবী লতা জাতীয় উদ্ভিদ। এর আদি নিবাস ক্রান্তীয় আমেরিকা হলেও এটি দুনিয়ার প্রায় সকল ক্রান্তীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়। অস্ট্রেলিয়া, ফিজি, ভিয়েতনাম, মেক্সিকো এবং আমাদের দেশেও ব্যাপক ভাবে এর দেখা মেলে। কুঞ্জলতা সাধারণত ১-৩ মিটার লম্বা হয়। কান্ড নরম সবুজ, সহজেই ভেঙে যায় তবে পরিনত হলে বাদামি রঙের ও তুলনায় পোক্ত হয়ে থাকে। এর কান্ড বল্লী ধরনের অর্থাৎ এদের কোন আকর্ষ থাকে না তাই কান্ডের সাহায্যে কোন অবলম্বন কে জড়িয়ে ওপরে ওঠে।
কুঞ্জলতার পাতা গাঢ় সবুজ রঙের। পাতা সরল, একান্তর ভাবে সজ্জিত। পাতাগুলি ৫ – ৭.৫ সেমি লম্বা। পত্রকিনারা পালকের মতো গভীরভাবে খন্ডিত, পাতার প্রত্যেক পাশে ৯-১৯টি করে খন্ড থাকে। এরূপ খন্ডনের কারনে পাতাগুলিকে দেখতে লাগে অনেকটা ফার্ণের মত। ঘনভাবে লতানো কুঞ্জলতার পাতাও আলাদা সৌন্দর্যের প্রকাশ ঘটায়।
সাধারণত গ্রীষ্মের শুরু থেকে কুঞ্জলতায় ফুল ফুটতে শুরু করে এবং প্রায় শীতকাল পর্যন্ত ফোটে। ফুল সকালে ফোটে বলে অনেকে একে সূর্যকান্তি ফুল নামেও ডাকে। ফুলগুলি গন্ধহীন, ৩-৪ সেমি লম্বা এবং ২ সেমি ব্যাসবিশিষ্ট। দল ও বৃতি একসাথে যুক্ত হয়ে নল বা মাইকের মত আকার নেয়। ফুলে ৫টি সূচালো অগ্রভাগ বিশিষ্ট পাঁপড়ি থাকে। পাঁচকোণা বিশিষ্ট তারকাকৃতি ফুল হয় বলে একে তারালতা নামেও ডাকা হয়। পাঁপড়ির মাঝে থাকে ৫ টি সাদা পুংকেশর। পুষ্পদন্ডে ১-৩ টি ফুল ফোটে। ফুলের রঙ সাধারণত লাল তবে গোলাপি বা সাদা রঙের ফুলও দেখা যায়।
ফুল ঝরে গিয়ে ছোট ছোট ডিম্বাকার ফল হয়। ফলগুলি ৫-৮ মিমি লম্বা। কচি অবস্থায় সবুজ থাকলেও পরে বাদামি বর্ণ ধারন করে। ফল শুষ্ক প্রকৃতির এবং ওপরের অংশ পাতলা খোসা আবৃত। ফলের ভেতর থাকে ছোট ছোট কালো রঙের বীজ। প্রতি ফলে ৪টি করে বীজ থাকে। সাধারনত বীজ থেকে এর বংশ বিস্তার হয়।
কুঞ্জলতা সুন্দর ফুল ও পাতার কারনে সৌন্দর্যবর্ধক লতা হিসাবেই ব্যবহার করা হয় তবে এর ভেষজ গুণও রয়েছে। আয়ুর্বেদীয় চিকিৎসায় একে অতিশয় স্নিগ্ধকর উদ্ভিদ হিসাবে গণ্য করা হয়। পাতার গুঁড়ো, রস বা পাতার প্রলেপ অর্শ রোগের উপশম করে। কার্বাঙ্কলে পাতা বাটার প্রলেপ লাগালে আরাম বোধ হয়। এছাড়া শারীরিক দৌর্বল্য, রক্ত আমাশয়, বুকের ব্যথা ও কর্কট রোগেও এর ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
|| বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস ||
Kingdom : Plantae
Subkingdom : Tracheobionta
Superdivision : Spermatophyta
Division : Magnoliophyta
Class : Magnoliopsida
Subclass : Asteridae
Order : Solanales
Family : Convolvulaceae
Genus : Ipomoea
Species : Ipomoea quamoclit


কয়েক দশক আগেও আমাদের মতো বড় পরিবারে একটি সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে কয়েক দিনের মধ্যেই কত অসংখ্য নাম হয়ে যেত তার। দাদু-ঠাকুমা থেকে পিঠোপিঠি ভাইবোন যে যেমন খুশি নাম ধরে ডাকতো। সে সবই আদরের নাম, সেসব শব্দের অধিকাংশেরই কোনো অর্থ হয় না। আবার সেই নবজাতককে যে সবসময় সুন্দর দেখতে হতো, দেখলেই কোলে নিতে ইচ্ছে করে, তেমন নাও হতে পারে।

আমার নিজেরই কত নাম ছিল! এখন সেসব মনে পড়লে কষ্ট হয়, কারণ যাঁরা সেই বিশেষ কোনো নামটি ধরে ডাকতেন, তাঁরা অধিকাংশই আজ আর নেই। সে নামে আর কোনোদিন কেউ আমাকে ডাকবে না!
সে যাক। ফুলের কথায় আসি।

আজকের ফুলটির তেমনি অনেক নাম; তরুলতা, কুঞ্জলতা, কামলতা, গেট ফুল, লবঙ্গলতিকা। দক্ষিণের লোক বলেন কাশিরত্নম।

ফুলটি আসলে এক প্রজাতির মর্নিং গ্লোরী (Ipomoea). তাই সাহেবরা বলেন Cypress vine morning glory, Star glory, Cardinal vine (Cardinal climber বা Cardinal creeper কিন্তু অন্য গাছ) ইত্যাদি।
আর বিজ্ঞানী বলেন Ipomoea quamoclit.


Comments

Popular posts from this blog

Jhumko Lata, ঝুমকো লতা, Passion flower (Passiflora caerulea)

Jhumko Lata , ঝুমকো লতা, Passion flower ( Passiflora caerulea ) জংলি ঝুমকো ইংরেজি নাম: Wild Passion Flower বৈজ্ঞানিক নাম: Passiflora foetida পরিচিতি: এটি আরোহী লতা। আকর্ষীর মাধ্যমে কোনো ধারককে আঁকড়ে ধরে বেয়ে ওঠে। ফুল সুগন্ধি নয়, তবে দেখতে আকর্ষণীয়। পাতা একান্তর, দুটি খাঁজ রয়েছে। ফুল বেগুনি ও সাদা রঙের। বৃতি পাঁচটি, দল পাঁচটি এবং বৃতি নল থেকে কিছুটা খাটো। ফল পাকলে কমলা লাল বর্ণের হয়।এর পাকা ফল খাওয়া যায়। স্বাদে মিষ্টি ও রসাল। কিন্তু কাঁচা ফল বিষাক্ত ও ভক্ষণে মানা। বাংলাদেশ ছাড়া মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, চীন, মাদাগাস্কার ও উত্তর অস্ট্রেলিয়ায় এ লতার বিস্তৃতি রয়েছে। বীজ দ্বারা বংশবৃদ্ধি ঘটে। প্যাশন ফ্লাওয়ার / ঝুমকোলতা বৈজ্ঞানিক নাম: Passiflora Incarnata পরিচিতি: এটি একটি লতা জাতীয় উদ্ভিদ। প্রায় ৩০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এ গাছেরপাতা দেখতে হাতের তালুর মতো। পাতায় তিনটি খাঁজ আছে এবং প্রতিটি অংশ দেখতে আঙ্গুল সদৃশ। পাতার অগ্রভাগ সুচালো। পাতার কক্ষ থেকে লতা বের হয়। ফুল একক, সুগন্ধযুক্ত। বাতাসে একটা মৌতাতানো সুবাসিত গন্ধ ছড়ায়। হালকা বেগুনি রঙের পাপড়ি বাইরের দিকে সজ্জিত থাকে। এ গাছের ...

অলকানন্দা

অলকানন্দা বৈজ্ঞানিক নাম: Allamanda cathartica পরিচিতি: কান্ড গোল, সরু সরু ডাল, চিরসবুজ, তেমন পত্রঘন নয়। পর্বসন্ধিতে ৪টি পাতা, লম্বাটে, ৭-১১*৩-৫ সেমি, পাতার নিচের মধ্যশিরা রোমশ। গ্রীষ্ম ও বর্ষায় অনেকদিন ফুল ফোটে। বড় বড় হলুদ রঙের ফুল, গন্ধহীন, দলনলের ছড়ান, প্রায় ৬ সেমি চওড়া, মুখ গোলাকার, ৫ লতি। অলকানন্দা বাংলা নাম : অলকানন্দা, স্বর্ণঘন্টা, ঘন্টালতা ইংরেজি নাম : Golden Trumpet, Yellow Bell, Common Trumpetvine, Yellow Allamanda বৈজ্ঞানিক নাম : Allamanda cathartica অলকানন্দা (রবি ঠাকুরের দেয়া নাম) একটি গুল্মজাতীয় গাছ। ব্রাজিল ও মধ্য আমেরিকার প্রজাতি। কান্ড গোল, সরু ডাল, চিরসবুজ, পাতা তেমন ঘন নয়। পর্বসন্ধিতে ৪টি পাতা, লম্বাটে, ৭-১১.৩-৫ সেমি, পাতার নিচের মধ্যশিরা রোমশ, বিন্যাস আবর্ত। গ্রীষ্ম ও বর্ষায় অনেকদিন ফুল ফোটে। ডালের আগায় বড় বড় হলুদ রঙের ফুলটি দেখতে খুবই সুন্দর, ফুল গন্ধহীন, দলনলের ছড়ান, প্রায় ৬ সেমি চওড়া, মুখ গোলাকার, ৫ লতি। রৌদ্রকরোজ্জ্বল দিনে এটি সবচেয়ে ভালভাবে ফোটে। জল জমে থাকেনা এমন মাটিতে এটি ভাল জন্মে। এটি অনেকটা লতা জাতীয় গাছ, তাই বেড়া বা লাঠিতে ভর দিয়ে এটি বেড...