Skip to main content

Jhumko Lata, ঝুমকো লতা, Passion flower (Passiflora caerulea)

Image result for Passion flower (Passiflora caerulea)

Jhumko Lata, ঝুমকো লতা, Passion flower (Passiflora caerulea)

জংলি ঝুমকো
ইংরেজি নাম: Wild Passion Flower
বৈজ্ঞানিক নাম: Passiflora foetida
পরিচিতি:
এটি আরোহী লতা। আকর্ষীর মাধ্যমে কোনো ধারককে আঁকড়ে ধরে বেয়ে ওঠে। ফুল সুগন্ধি নয়, তবে দেখতে আকর্ষণীয়। পাতা একান্তর, দুটি খাঁজ রয়েছে। ফুল বেগুনি ও সাদা রঙের। বৃতি পাঁচটি, দল পাঁচটি এবং বৃতি নল থেকে কিছুটা খাটো। ফল পাকলে কমলা লাল বর্ণের হয়।এর পাকা ফল খাওয়া যায়। স্বাদে মিষ্টি ও রসাল। কিন্তু কাঁচা ফল বিষাক্ত ও ভক্ষণে মানা। বাংলাদেশ ছাড়া মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, চীন, মাদাগাস্কার ও উত্তর অস্ট্রেলিয়ায় এ লতার বিস্তৃতি রয়েছে। বীজ দ্বারা বংশবৃদ্ধি ঘটে।


প্যাশন ফ্লাওয়ার / ঝুমকোলতা
বৈজ্ঞানিক নাম: Passiflora Incarnata
পরিচিতি:
এটি একটি লতা জাতীয় উদ্ভিদ। প্রায় ৩০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এ গাছেরপাতা দেখতে হাতের তালুর মতো। পাতায় তিনটি খাঁজ আছে এবং প্রতিটি অংশ দেখতে আঙ্গুল সদৃশ। পাতার অগ্রভাগ সুচালো। পাতার কক্ষ থেকে লতা বের হয়। ফুল একক, সুগন্ধযুক্ত। বাতাসে একটা মৌতাতানো সুবাসিত গন্ধ ছড়ায়। হালকা বেগুনি রঙের পাপড়ি বাইরের দিকে সজ্জিত থাকে। এ গাছের ঔষধিগুণ আছে যা বিভিন্ন প্রকার রোগ-প্রতিরোধ ও নিরাময়ে ব্যবহার হয়ে থাকে।


|| ঝুমকো লতা ||
অন্যান্য নাম : ঝুমকো লতা, রাধিকা নাচন, কৃষ্ণকমল, পঞ্চপান্ডব, রাখী ফুল।
ইংরেজি নাম : Passion Flower, Christ's Crown, Christ's Thorn, Mother of God's Star, Clock Flower
বৈজ্ঞানিক নাম : Passiflora caerulea (নীল ঝুমকো লতা)
Passiflora incarnata (বেগুনি ঝুমকো লতা)
Passiflora racemosa (লাল ঝুমকো লতা)
Passiflora coccinea (রক্তাভ লাল ঝুমকো লতা)
Passiflora kermesina (গোলাপী ঝুমকো লতা)
‘হঠাৎ কিসের মন্ত্র এসে
ভুলিয়ে দিলে এক নিমেষে
বাদল বেলার কথা,
হারিয়ে পাওয়া আলোটিরে
নাচায় ডালে ফিরে ফিরে
ঝুমকো ফুলের লতা।’
এই ফুল দেখতে অনেকটাই কানের অলংকার ঝুমকোর মতো। সেই সুবাদে গাছটির পরিচিতি ঝুমকো লতা বলে। দৃষ্টিনন্দন এ ফুল গাছের আদি নিবাস যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকা, মেক্সিকো, ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং হাওয়াইয়ের মতো নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলেও জন্মে ঝুমকো লতা। আমাদের দেশেও ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করেছে। দীর্ঘজীবী এই লতা অনায়াসে টিকে থাকতে পারে বৈরী পরিবেশেও। যে কোনো স্থানে যত্নআত্তি ছাড়াই গাছ বেড়ে ওঠে। এ ফুলের রয়েছে প্রায় ৫০০ প্রজাতি।
‘ঝুমকো লতা কানের দুল
উঠল ফুটে বনের ফুল-
সবুজ পাতার ঘোমটা খুলে
ঝুমকো লতা হাওয়ায় দোলে।’
ঝুমকো লতা গুল্ম জাতীয় লতানো উদ্ভিদ। ডালপালা শক্ত ও দৃঢ় এবং রোমশ। কাণ্ড পুরানো হলে বেশ কাষ্ঠল হয়। গাছ দ্রুত বর্ধনশীল, চিরসবুজ ও পাতায় ভরা। তবে শীতপ্রধান অঞ্চলে আংশিক ভাবে পত্রমোচী। পাতার গোড়া থেকে গজানো একক আকর্ষ দিয়ে তেমন অবলম্বন পেলে এই লতা প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। একবার গাছ লাগালে কয়েক বছর বাঁচে ও ফুল দেয়।
ঝুমকো লতার পাতা দেখেও খুব সহজে গাছটিকে চেনা যায়। পাতার কিনারা গভীরভাবে বিভক্ত হওয়ার কারনে এই গাছের পাতা দেখতে অনেকটা হাতের তালুর মতো। পাতার এই খন্ডনগুলিকে লতি বলা হয়। প্রতি পাতায় ৩ থেকে ৭টি লতি থাকে। পাতা ১০-১৮ সেমি লম্বা এবং চওড়া, একান্তর ভাবে সজ্জিত। পাতার রঙ গাঢ় সবুজ, বোঁটা কিঞ্চিত খয়েরি। পাতার কক্ষ থেকে আকর্ষ বের হয়। পাতার অগ্রভাগ সুচালো। এই গাছের পাতা ছিঁড়লে অল্প গন্ধ বের হয়।
‘শৈশবে ঝুমকো ফুল ছুঁতে গিয়ে
নাগিনীকে দেখে চমকে উঠেছিলাম
তবু বনমালীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে
সেই ফুল পকেটে রেখেছি’
কানপাশার মত দেখতে ঝুমকো লতা সত্যিই এক বাহারী ফুল। এমন অলঙ্কার গড়নের ফুল প্রকৃতিতে বেশ দুর্লভ। তাই দেখলেই আলতো করে ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে করে যে কারোরই। আমাদের দেশে নীল, বেগুনি, লাল, সাদা ইত্যাদি রঙের ঝুমকো লতার ফুল পাওয়া গেলেও নীল ঝুমকো লতা ফুলের সৌন্দর্য ও সৌরভ এদের চেয়ে অনেক বেশি। ঝুমকো লতার ফুল গ্রীষ্মের শেষদিক থেকে ফুল ফোটা শুরু করে এবং সারা বর্ষাকালজুড়ে এটি টিকে থাকে। এ জন্য বর্ষার ফুল হিসেবেই এর পরিচিতি। সারা গাছে অসংখ্য ফুল ফোটে কিন্তু ফোটে এককভাবে। প্রতিটি পাতার গোড়া থেকে একটি করে ফুল ফোটে। ফুলগুলো দেখতে ভারি সুন্দর। হাল্কা বেগুনি আভা মেশানো সাদা বা ক্রিম রঙের পাপড়ি। সংখ্যায় ৫টি। ফুলের ব্যাসার্ধ ৫ - ৬ সেমি। ঝুমকো লতার ৫টি পাঁপড়ি আর ৫টি বৃত্যাংশ এতটাই সদৃশ ও এমন ভাবে সাজানো থাকে যে বৃত্যাংশগুলিকেও পাঁপড়ি বলে ভুল হয়। বৃত্যাংশের শীর্ষে থাকে ছোট্ট একটি হুকের মত অংশ, যা দেখে পাঁপড়ি ও বৃত্যাংশ আলাদা করে চেনা সম্ভব হয়। ফুলের কেন্দ্রে পাঁচটি সবুজাভ হলুদ পরাগধানীর ওপর কলসির মতো ডিম্বাশয়টি বসানো থাকে। ডিম্বাশয়ের থেকে নির্গত গর্ভদন্ডটি তিনটি বেগুনি রঙের গর্ভমুণ্ডে বিভক্ত। ফুলের কেন্দ্র থেকে বাইরের দিকে ছড়ানো থাকে দুই স্তরে সাজানো বর্ণিল চক্রাকৃতির করোনা। করোনা ফুলের কেন্দ্র থেকে বাইরের দিকে যথাক্রমে গাঢ় বেগুনি, সাদা ও নীল রঙ দিয়ে সাজানো। ফুলের রয়েছে মিষ্টি ঘ্রাণ। ফুলটির মঞ্জরিপত্র থেকে একধরনের আঠালো পদার্থ নিঃসৃত হয়। এর সুবাদে মঞ্জরিপত্রের সাহায্যে লতাটি ক্ষতিকর পোকামাকড়কে ফাঁদে ফেলতে পারে।
‘শীতের বনে কোন্‌ সে কঠিন
আসবে বলে
শিউলিগুলি ভয়ে মলিন
বনের কোলে।
আমলকী-ডাল সাজল কাঙাল,
খসিয়ে দিল পল্লবজাল,
কাশের হাসি হাওয়ায় ভাসি
যায় যে চলে।
সাইবে না সে পাতায় ঘাসে
চঞ্চলতা,
তাই তো আপন রঙ ঘুচাল
ঝুমকো লতা।’
ঝুমকো লতার বিশেষত্ব হলো, এর ফল ভারী মনোলোভা। চারদিকে জালের মতো ঘিরে থাকা ঘন মঞ্জরী-পত্রের মাঝে গোল বা ডিম্বাকৃতির ফল। খানিকটা লটকনের আকৃতির ফলটির ব্যাসার্ধ ২ - ৩ সেমি। খোসা পাতলা, একটু চাপ দিলে সহজেই ফেটে যায়। ভেতরটা ফাঁপা। পাকার সময় ফলটি হলদে কমলা থেকে লাল রং ধারণ করে। ভেতরে থাকে কালো কালো অনেক বীজ। প্রতিটা বীজের চারদিকে অর্ধস্বচ্ছ রসাল আবরণ। এ ফলের স্বাদ বেশ মিষ্টি। ভালোমত পাকার আগে একটু টক টক ভাব থাকে তবে সেটাও খেতে বেশ মজার। সুন্দর গন্ধ আছে।
এই গাছের ঔষধি গুণ রয়েছে। বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ও নিরাময়ে এর ব্যবহার হয়ে থাকে। এ ছাড়া এই লতায় প্রচুর পরিমাণে স্যাপনিনস থাকায় এটি কোথাও কোথাও সাবানের বিকল্প ডিটারজেন্ট হিসেবে ব্যবহারের নজিরও আছে। ফলই শুধু নয়, ঝুমকো লতার কচি পাতাও খাওয়া যায়। ভিয়েতনামের বিভিন্ন স্থানে ঝুমকো লতার শুকনো পাতা ঘুমের সমস্যা সারানোর ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
ঝুমকো লতার গিঁটসহ বয়স্ক লতা কেটে লাগালে নতুন গাছ পাওয়া যায়। এছাড়া গুটিকলম করে বা বীজ থেকেও নতুন চারা তৈরি করা যায়। যত্ন নিলে লাগানোর পর এক বছরের মধ্যেই সে গাছে ফুল ফোটে। বেশি স্যাঁতসেঁতে জায়গা ও ছায়ায় গাছ ভালো হয় না বরং এ গাছ খরা কিছুটা সইতে পারে তাই এ গাছের জন্য দরকার রোদ যুক্ত জায়গা।
'There has fallen a splendid tear
From the passion-flower at the gate.
She is coming, my dove, my dear;
She is coming, my life, my fate;'
- Come into the Garden, Maud (Alfred Tennyson)
|| বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস ||
Kingdom :Plantae
Subkingdom :Viridiplantae
Infrakingdom :Streptophyta
Superdivision :Embryophyta
Division :Tracheophyta
Subdivision :Spermatophytina
Class :Magnoliopsida
Superorder :Rosanae
Order :Malpighiales
Family :Passifloraceae
Genus :Passiflora L.
Species :Passiflora caerulea

Comments

Popular posts from this blog

কুঞ্জলতা

|| কুঞ্জলতা || অন্যান্য নাম : কুঞ্জলতা, কামলতা, তারালতা, তরুলতা, গেইট লতা, সূর্যকান্তি, জয়ন্তী ফুল। ইংরেজি নাম : Cypress Vine, Cypressvine Morning Glory, Cardinal Creeper, Cardinal Climber, Cardinal Vine, Star Glory, Hummingbird Vine, Cupid's flower বৈজ্ঞানিক নাম : Ipomoea quamoclit কুঞ্জলতা একপ্রকার বর্ষজীবী লতা জাতীয় উদ্ভিদ। এর আদি নিবাস ক্রান্তীয় আমেরিকা হলেও এটি দুনিয়ার প্রায় সকল ক্রান্তীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়। অস্ট্রেলিয়া, ফিজি, ভিয়েতনাম, মেক্সিকো এবং আমাদের দেশেও ব্যাপক ভাবে এর দেখা মেলে। কুঞ্জলতা সাধারণত ১-৩ মিটার লম্বা হয়। কান্ড নরম সবুজ, সহজেই ভেঙে যায় তবে পরিনত হলে বাদামি রঙের ও তুলনায় পোক্ত হয়ে থাকে। এর কান্ড বল্লী ধরনের অর্থাৎ এদের কোন আকর্ষ থাকে না তাই কান্ডের সাহায্যে কোন অবলম্বন কে জড়িয়ে ওপরে ওঠে। কুঞ্জলতার পাতা গাঢ় সবুজ রঙের। পাতা সরল, একান্তর ভাবে সজ্জিত। পাতাগুলি ৫ – ৭.৫ সেমি লম্বা। পত্রকিনারা পালকের মতো গভীরভাবে খন্ডিত, পাতার প্রত্যেক পাশে ৯-১৯টি করে খন্ড থাকে। এরূপ খন্ডনের কারনে পাতাগুলিকে দেখতে লাগে অনেকটা ফার্ণের মত। ঘনভাবে লতানো কুঞ্জলতার পাতাও ...

সোনাঝুরি

সোনাঝুরি A cluster of flowers at the end of the blooming season. Acacia auriculiformis Family Fabaceae Khoai near Shantiniketan, West Bengal, India আকাশমণি অন্যান্য নাম : আকাশমণি, সোনাঝুরি ইংরেজি নাম : Auri, Earleaf Acacia, Earpod Wattle, Northern Black Wattle, Papuan Wattle, Tan Wattle বৈজ্ঞানিক নাম : Acacia auriculiformis আকাশমণি একটি দ্রুতবৃদ্ধিসম্পন্ন চিরহরিৎ বৃক্ষ। এটি অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও পাপুয়া নিউ গিনির স্থানীয় প্রজাতি। চিরসবুজ এই বৃক্ষটি ১৫-৩০মি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। কান্ড বহু শাখাপ্রশাখা যুক্ত। গাছের বাকল পরিণত অবস্থায় ছাই, বাদামি বা কালচে বাদামি রঙের এবং অমসৃণ ও ফাটল যুক্ত হয়। এই গাছের যেটাকে আমরা অনেকেই পাতা বলি সেটি আসলে পাতা নয়, এটি মূলত পর্ণবৃন্ত। বীজ অঙ্কুরিত হবার পর পক্ষল যৌগিক পত্র ধারণ করে, কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই পত্রকগুলি ঝরে পড়ে। এর পর যৌগিক পত্রের বৃন্ত পরিবর্তিত হয়ে প্রসারিত, চ্যাপ্টা পাতার মত আকার ধারণ করে ও পাতার মত কাজ করে। সবুজ পর্ণবৃন্তগুলি ৮-২০ সেমি লম্বা ও ১-৪ সেমি চওড়া এবং মসৃণ। প্রতি পর্ণবৃন্তে ৩-৮ টি সমান্তরাল ভাবে অবস্থিত...

ডেইজি

ডেইজি বৈজ্ঞানিক নাম : Bellis perenni পরিচিতি: দেখতে সাদা, মাঝখানে হলুদ ছোট ছোট অসংখ্য পাপড়ি দিয়ে একটি চোখের মতো আকৃতি তৈরি করে। ডেই ডেইজি ফুলটি ভোর থেকেই ফোটে, একে বলা হয় “দিনের চোখ”। গুনাগুন: এর অনেক গুনাগুন রয়েছে, যেমন খাদ্য হিশেবে ডেইজি ফুলের পাতা সালাদের সাথে খাওয়া যায়, এর পাতার মধ্যে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। ওষুধি গুনের দিক থেকে রক্তক্ষরণ কমানো, বদহজম এবং কফ কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। মৌমাছি ডেইজি ফুল খুব ভালবাসে এবং মধু তৈরিতে ভাল ভুমিকা রাখে।