Skip to main content

Shiuli, শিউলি, Night-flowering Jasmine (Nyctanthes arbortristis)

Image result for Shiuli, শিউলি, Night-flowering Jasmine (Nyctanthes arbortristis)

Shiuli, শিউলি, Night-flowering Jasmine (Nyctanthes arbortristis)

শিউলি ফুল, শিউলি ফুল, কেমন ভুল, এমন ভুল॥ রাতের বায় কোন্‌ মায়ায় আনিল হায় বনছায়ায়,. ভোরবেলায় বারে বারেই ফিরিবারে হলি ব্যাকুল॥ কেন রে তুই উন্মনা! নয়নে তোর হিমকণা। কোন্‌ ভাষায় চাস বিদায়, গন্ধ তোর কী জানায়
-- সঙ্গে হায় পলে পলেই দলে দলে যায় বকুল॥ ~রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ফুলের নাম- শিউলি, শেফালি
বৈজ্ঞানিক নাম- Nyctanthes arbortristis
পরিবার- Oleaceae
অন্যান্য নামঃ সংস্কৃত ভাষায় – নালাকুমকুমাকা, হারসিঙ্গারাপুস্পক, সুকলাঙ্গি, রাজানিহাসা, মালিকা, অপরাজিতা, বিজয়া, নিসাহাসা, প্রহার্ষিনী, প্রভোলানালিকা, বাথারি, ভুথাকেশি, সীতামাঞ্জারি, সুবাহা, নিশিপুস্পিকা, প্রযক্তা, প্রযক্তি।
‘স্বচ্ছ হাসি শরৎ আসে পূর্ণিমামালিকা, সকল বন আকুল করে শুভ্র শেফালিকা।’ কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিউলি, শরৎ আর পূর্ণিমাকে দেখেছেন একটিকে অপরটির অনুষঙ্গ হিসেবে। শরৎ মানেই শিউলি আর শিউলি মানেই শরৎ। শীতে যে শিউলিগাছ পাতা ঝরিয়ে হতশ্রী, গ্রীষ্মে আবার সে পাতায় ভরা সবুজ সুন্দরী। ওর উদ্ভিদতাত্ত্বিক নামও কিন্তু সে কথাই বলে। গ্রিক শব্দ ‘নিকট্যানথাস’ অর্থ নিশিপুষ্প এবং ‘আরবরট্রিসটিস’ অর্থ বিষাদিনী।
গ্রীষ্মের বিষাদিনী শিউলি শরতে ফোটায় নিশিপুষ্প। রাতের ঐশ্বর্যময়ী ফুলভরা শিউলিগাছ সকালে ফুল ঝরিয়ে রিক্ত বিষাদিনী। রাতে ফোটা শিউলির সতেজতা দিনের আলো বাড়ার সাথে সাথেই মলিন হতে শুরু করে। শিউলি ফুল রাতের বেলায় ফুটে বেশ কিছুটা দূর পর্যন্ত সৌরভে ভরিয়ে তোলে চার দিক। শরতের সবুজ ঘাসে কমলা রঙের নলাকার বোঁটায় সাদা পাঁপড়ির অজস্র ফুল পড়ে থাকার দৃশ্য লোভনীয়। সবুজ ঘাসে খালি পা মাড়িয়ে শিউলি ফুল কুড়ানোর একটা আলাদা সুখ আছে। রাতে ফুটে সকাল না হতেই ঝরে পড়ে বলে এই ফুলকে বলে ‘নাইট জেসমিন’। শিউলি ছাড়াও এর আরো অনেক নাম আছে; যেমন- শিউলি, শেফালি, শেফালিকা (বাংলা), শেওয়ালি (মণিপুরী), পারিজাত (মারাঠি), পারিজাতম (তেলেগু), গঙ্গা শিউলি (উড়িষ্যা) হরসিংগার, রাগাপুষ্পী, মালিকা ইত্যাদি।
শিউলি আমাদের দেশজ ফুল। শিউলিগাছ ১০মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এর গাছ কাষ্ঠল, ঝোপাল, গুল্ম ও বহুবর্ষজীবী। বাকল সাদাটে ধূসর ও মসৃণ। পাতা ছয় থেকে ১২ সেন্টিমিটার লম্বা ও দুই থেকে ৬.৫ সেন্টিমিটার চওড়া, পাতা খসখসে, কিনারা খাঁজকাটা, পুরু, যৌগিক এবং স্বাদে তেতো। এ জন্য পাতার রস কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে। শিউলিপাতা বেটে রস করে খাওয়া যায়, ভাতা ঘিয়ে ভেজে গরম ভাত দিয়ে মেখে খাওয়া যায়। ফুল তারকা আকৃতি, পাঁচ পাপড়িবিশিষ্ট, পাপড়ি সাদা, বোঁটা কমলা। দুই থেকে সাতটি ফুল একটি থোকায় ফোটে। ফুল অনেক সময় কাপড়ে হলুদ রঙ করতে ব্যবহৃত হয়। ফুল থেকে সুগন্ধি তৈরি হয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও থাইল্যান্ডের কাঞ্চনাবুড়ি প্রদেশে শিউলি রাষ্ট্রীয় ফুল। বীজ দিয়ে শিউলির চারা তৈরি করা যায়। ফুল ফোটা শেষ হলে সেসব গাছ থেকে শুকনো বীজ সংগ্রহ করে পানিতে ভিজিয়ে মাটিতে পুঁতে দিলে সেখানেই গাছ জন্মে। চারা রক্ষা করে যত্ন নিলে পরের বছরই ফুল ফোটে।
মূল লেখা- মৃত্যুঞ্জয় রায়

Comments

Popular posts from this blog

কুঞ্জলতা

|| কুঞ্জলতা || অন্যান্য নাম : কুঞ্জলতা, কামলতা, তারালতা, তরুলতা, গেইট লতা, সূর্যকান্তি, জয়ন্তী ফুল। ইংরেজি নাম : Cypress Vine, Cypressvine Morning Glory, Cardinal Creeper, Cardinal Climber, Cardinal Vine, Star Glory, Hummingbird Vine, Cupid's flower বৈজ্ঞানিক নাম : Ipomoea quamoclit কুঞ্জলতা একপ্রকার বর্ষজীবী লতা জাতীয় উদ্ভিদ। এর আদি নিবাস ক্রান্তীয় আমেরিকা হলেও এটি দুনিয়ার প্রায় সকল ক্রান্তীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়। অস্ট্রেলিয়া, ফিজি, ভিয়েতনাম, মেক্সিকো এবং আমাদের দেশেও ব্যাপক ভাবে এর দেখা মেলে। কুঞ্জলতা সাধারণত ১-৩ মিটার লম্বা হয়। কান্ড নরম সবুজ, সহজেই ভেঙে যায় তবে পরিনত হলে বাদামি রঙের ও তুলনায় পোক্ত হয়ে থাকে। এর কান্ড বল্লী ধরনের অর্থাৎ এদের কোন আকর্ষ থাকে না তাই কান্ডের সাহায্যে কোন অবলম্বন কে জড়িয়ে ওপরে ওঠে। কুঞ্জলতার পাতা গাঢ় সবুজ রঙের। পাতা সরল, একান্তর ভাবে সজ্জিত। পাতাগুলি ৫ – ৭.৫ সেমি লম্বা। পত্রকিনারা পালকের মতো গভীরভাবে খন্ডিত, পাতার প্রত্যেক পাশে ৯-১৯টি করে খন্ড থাকে। এরূপ খন্ডনের কারনে পাতাগুলিকে দেখতে লাগে অনেকটা ফার্ণের মত। ঘনভাবে লতানো কুঞ্জলতার পাতাও ...

সোনাঝুরি

সোনাঝুরি A cluster of flowers at the end of the blooming season. Acacia auriculiformis Family Fabaceae Khoai near Shantiniketan, West Bengal, India আকাশমণি অন্যান্য নাম : আকাশমণি, সোনাঝুরি ইংরেজি নাম : Auri, Earleaf Acacia, Earpod Wattle, Northern Black Wattle, Papuan Wattle, Tan Wattle বৈজ্ঞানিক নাম : Acacia auriculiformis আকাশমণি একটি দ্রুতবৃদ্ধিসম্পন্ন চিরহরিৎ বৃক্ষ। এটি অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও পাপুয়া নিউ গিনির স্থানীয় প্রজাতি। চিরসবুজ এই বৃক্ষটি ১৫-৩০মি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। কান্ড বহু শাখাপ্রশাখা যুক্ত। গাছের বাকল পরিণত অবস্থায় ছাই, বাদামি বা কালচে বাদামি রঙের এবং অমসৃণ ও ফাটল যুক্ত হয়। এই গাছের যেটাকে আমরা অনেকেই পাতা বলি সেটি আসলে পাতা নয়, এটি মূলত পর্ণবৃন্ত। বীজ অঙ্কুরিত হবার পর পক্ষল যৌগিক পত্র ধারণ করে, কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই পত্রকগুলি ঝরে পড়ে। এর পর যৌগিক পত্রের বৃন্ত পরিবর্তিত হয়ে প্রসারিত, চ্যাপ্টা পাতার মত আকার ধারণ করে ও পাতার মত কাজ করে। সবুজ পর্ণবৃন্তগুলি ৮-২০ সেমি লম্বা ও ১-৪ সেমি চওড়া এবং মসৃণ। প্রতি পর্ণবৃন্তে ৩-৮ টি সমান্তরাল ভাবে অবস্থিত...

ডেইজি

ডেইজি বৈজ্ঞানিক নাম : Bellis perenni পরিচিতি: দেখতে সাদা, মাঝখানে হলুদ ছোট ছোট অসংখ্য পাপড়ি দিয়ে একটি চোখের মতো আকৃতি তৈরি করে। ডেই ডেইজি ফুলটি ভোর থেকেই ফোটে, একে বলা হয় “দিনের চোখ”। গুনাগুন: এর অনেক গুনাগুন রয়েছে, যেমন খাদ্য হিশেবে ডেইজি ফুলের পাতা সালাদের সাথে খাওয়া যায়, এর পাতার মধ্যে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। ওষুধি গুনের দিক থেকে রক্তক্ষরণ কমানো, বদহজম এবং কফ কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। মৌমাছি ডেইজি ফুল খুব ভালবাসে এবং মধু তৈরিতে ভাল ভুমিকা রাখে।