
Kamini, কামিনী, Orange Jessamine (Murraya paniculata)
কামিনী
বৈজ্ঞানিক নাম : Murraya exotica.
পরিচিতি:
চিরসবুজ ছোটখাটো ধরনের গাছ, ৩ থেকে ৪ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। কখনও কখনও গুল্ম আকৃতিরও হতে পারে। যৌগপত্র ১-পক্ষল, পত্রিকা ৫ থেকে ৯টি, সাড়ে তিন সেন্টিমিটার লম্বা ও লেবুগন্ধী। গ্রীষ্ম ও বর্ষায় সারা গাছ সাদা ও সুগন্ধি ফুলের থোকায় ভরে ওঠে। ফুল ২ সেন্টিমিটার চওড়া, ৫টি খোলা পাপড়ি, বাসি হলে ঝরেপড়ে। ফল ছোট ও ডিম্বাকার, পাকলে লাল-কমলা রঙের হয়।
গুনাগুন:
প্রথাগতভাবে, কামিনী বেদনানাশক হিসেবে ঐতিহ্যগত ঔষধ এবং কাঠের জন্য ব্যবহার করা হয়। কামিনীর পাতার অশোধিত ইথানলীয় সার, ডায়রিয়া এবং অন্যান্য জ্বলনশীল ব্যথার নিরাময় হিসেবে কাজ করে
বৈজ্ঞানিক নাম : Murraya exotica.
পরিচিতি:
চিরসবুজ ছোটখাটো ধরনের গাছ, ৩ থেকে ৪ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। কখনও কখনও গুল্ম আকৃতিরও হতে পারে। যৌগপত্র ১-পক্ষল, পত্রিকা ৫ থেকে ৯টি, সাড়ে তিন সেন্টিমিটার লম্বা ও লেবুগন্ধী। গ্রীষ্ম ও বর্ষায় সারা গাছ সাদা ও সুগন্ধি ফুলের থোকায় ভরে ওঠে। ফুল ২ সেন্টিমিটার চওড়া, ৫টি খোলা পাপড়ি, বাসি হলে ঝরেপড়ে। ফল ছোট ও ডিম্বাকার, পাকলে লাল-কমলা রঙের হয়।
গুনাগুন:
প্রথাগতভাবে, কামিনী বেদনানাশক হিসেবে ঐতিহ্যগত ঔষধ এবং কাঠের জন্য ব্যবহার করা হয়। কামিনীর পাতার অশোধিত ইথানলীয় সার, ডায়রিয়া এবং অন্যান্য জ্বলনশীল ব্যথার নিরাময় হিসেবে কাজ করে
|| কামিনী ফুল ||
অন্যান্য নাম : কামিনী, একাঙ্গী, বীরসার
ইংরেজি নাম : Orange jessamine, Chinese Box, Mock Orange, Mock Lime, Satinwood, Lakeview jasmine, Cosmatic Baek
বৈজ্ঞানিক নাম : Murraya paniculata
ইংরেজি নাম : Orange jessamine, Chinese Box, Mock Orange, Mock Lime, Satinwood, Lakeview jasmine, Cosmatic Baek
বৈজ্ঞানিক নাম : Murraya paniculata
“ছি ছি সখা কি করিলে, কোন্ প্রাণে পরশিলে
কামিনীকুসুম ছিল বন আলো করিয়া—
মানুষপরশ-ভরে শিহরিয়া সকাতরে
ওই যে শতধা হয়ে পড়িল গো ঝরিয়া।
জান ত কামিনী সতী, কোমল কুসুম অতি
দূর হ’তে দেখিবারে, ছুঁইবারে নহে সে—
দূর হ’তে মৃদু বায়, গন্ধ তার দিয়ে যায়,
কাছে গেলে মানুষের শ্বাস নাহি সহে সে।
মধুপের পদক্ষেপে পড়িতেছে কেঁপে কেঁপে,
কাতর হতেছে কত প্রভাতের সমীরে!
পরশিতে রবিকর শুকায়েছে কলেবর,
শিশিরের ভরটুকু সহিছে না শরীরে।
হেন কোমলতাময় ফুল কি না-ছুঁলে নয়!
হায় রে কেমন বন ছিল আলো করিয়া!
মানুষপরশ-ভরে শিহরিয়া সকাতরে,
ওই যে শতধা হয়ে পড়িল গো ঝরিয়া!”
কামিনীকুসুম ছিল বন আলো করিয়া—
মানুষপরশ-ভরে শিহরিয়া সকাতরে
ওই যে শতধা হয়ে পড়িল গো ঝরিয়া।
জান ত কামিনী সতী, কোমল কুসুম অতি
দূর হ’তে দেখিবারে, ছুঁইবারে নহে সে—
দূর হ’তে মৃদু বায়, গন্ধ তার দিয়ে যায়,
কাছে গেলে মানুষের শ্বাস নাহি সহে সে।
মধুপের পদক্ষেপে পড়িতেছে কেঁপে কেঁপে,
কাতর হতেছে কত প্রভাতের সমীরে!
পরশিতে রবিকর শুকায়েছে কলেবর,
শিশিরের ভরটুকু সহিছে না শরীরে।
হেন কোমলতাময় ফুল কি না-ছুঁলে নয়!
হায় রে কেমন বন ছিল আলো করিয়া!
মানুষপরশ-ভরে শিহরিয়া সকাতরে,
ওই যে শতধা হয়ে পড়িল গো ঝরিয়া!”
কামিনীকে নিয়ে রবি ঠাকুরের লেখার মত সত্যিই কামিনী ফুল অতি কোমল, আলতো শিশিরের ভারটুকুও যেন সইতে পারে না। একটু ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছায় হাত বাড়ালে নিমিষেই ঝরে যায় সব পাপড়ি, শুধু আঙুলে লেগে থাকবে মিষ্টি মধুর গন্ধ। বৃষ্টিস্নাত দিনে কিংবা অবাধ্য বাতাসের ঝাপটায় কামিনী গাছ থেকে দলবেঁধে ঝরে পড়ে সাদা সাদা পাপড়ি। গাছের তলাটি দেখে তখন মনে হবে কেউ যেন মায়াবী সাদা চাদর বিছিয়ে দিয়েছে। গাছের দিকে তাকালে দেখা যায় তখনো পাতার ফাঁকে হাসছে গুচ্ছ গুচ্ছ শুভ্র স্নিগ্ধ ফুল।
কামিনী আমাদের দেশি ফুল মনে হলেও এটির জন্মস্থান দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, চীন ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে। কামিনী চিরসবুজ ক্ষুদ্র গুল্ম জাতীয় গাছ। গাছ, ৩ থেকে ৭ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। অসংখ্য শাখা-প্রশাখার ঠাসবুনন যুক্ত। ওপরের দিকে তেমন বাড়ে না। বাড়ে চারপাশে। তাই দেখতে ঝোপের মতো লাগে। এটি লেবু গোত্রীয়।
শুধু ফুলের সৌরভ কিংবা রূপ নয়, কামিনীর পাতার সৌন্দর্য মুগ্ধ হওয়ার মতো। ঘন বিন্যস্ত ছোট চিরসবুজ পাতাগুলো বেশ দৃষ্টিনন্দন। পাতা যৌগিক একপক্ষল ধরণের। প্রতি পাতায় ৫ থেকে ৯টি পত্রক থাকে। পত্রকগুলি লম্বাটে ডিম্বাকৃতি, ১.৫-২ ইঞ্চি লম্বা ও ১ ইঞ্চি চওড়া এবং একান্তর ভাবে সজ্জিত। পত্রক গাঢ় সবুজ রঙের, উপরিতল চকচকে এবং লেবুগন্ধী।
“দিবস অবশ যেন হয়েছে আলসে।
আমি ভাবি আর কেহ কি ভাবিছে বসে’!
তরুশাখে হেলাফেলা
কামিনী ফুলের মেলা,
থেকে থেকে সারাবেলা
পড়ে খসে খসে।
কি বাশি বাজিছে সদা প্রভাতে প্রদোষে।”
আমি ভাবি আর কেহ কি ভাবিছে বসে’!
তরুশাখে হেলাফেলা
কামিনী ফুলের মেলা,
থেকে থেকে সারাবেলা
পড়ে খসে খসে।
কি বাশি বাজিছে সদা প্রভাতে প্রদোষে।”
সুগন্ধ ও শুভ্রতার অনন্য প্রতীক কামিনীর সৌন্দর্য্য। বর্ষার ফুল বলা হলেও কামিনী মূলত শরতের মেঘের শুভ্রতার সঙ্গে মিল রেখে প্রস্ফুটিত হয়। প্রকৃতির সঙ্গে কামিনীর এই যূথবদ্ধতা লক্ষ্য করার মতো। ফুল ১২ মিমি ব্যাস যুক্ত, ফুলে থাকে পাঁচটি পাঁপড়ি, পুংকেশর ১০টি, মাঝে সবজে হলুদ রঙের একটি গর্ভকেশর। ২ সেমি লম্বা ও ৫-৮ মিমি চওড়া পাঁপড়িগুলি সাদা বা ক্রিম রঙের ও মুক্ত সজ্জা বিশিষ্ট। ঘন সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে মঞ্জরিবদ্ধ হয়ে ফোটে ছোট ছোট ফুল। সন্ধ্যাবেলায় ফোটে, ভোরবেলায় ঝরে যায়। রাতের বেলা ফুলের তীব্র সুগন্ধ বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে মোহনীয় করে রাখে রাতের পরিবেশ। বৃষ্টির জলে ধোয়া শ্বেতশুভ্র কামিনী দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না।
কামিনীর ফল ছোট, মাংসল। দৈর্ঘ্যে ১ ইঞ্চি পর্যন্ত ও আকারে আয়তাকার-ডিম্বাকার হয়ে থাকে। কচি অবস্থায় রঙ সবুজ হলেও পাকলে ফলগুলি কমলা থেকে লাল বর্ণের হয়ে থাকে। ফলে বীজ থাকে ১-২ টি। বীজ লম্বাকৃতি, উপরিভাগে সরু ও একদিক চ্যাপ্টা। রক্তিম ফলগুলি পাখির, বিশেষ করে বুলবুলির প্রিয় খাদ্য। বীজ ও কলমে চাষ। কামিনী থেকে কলম করে কেটে-ছেঁটে নানা আকৃতি তৈরি করা যায়। এই কারণে এ গাছে ভাল বনসাই হয়।
কামিনী শুধু রূপ সৌরভেই অনন্যা নয় এর ঔষধি গুণও আছে। গাছটি থেকে তৈরি ওষুধ শরীরের জ্বর সারাতে, বাত, সর্দ্দি ও হিস্টিরিয়া রোগে ব্যবহার করা হয়। ব্যথানাশক হিসেবেও কাজ করে। কামিনীর রাসায়নিক উপাদানের মধ্যে রয়েছে কওমারিন্স ও এ্যালকানয়েডস। রয়েছে কার্বোবেঞ্জল ও ক্যারটিনয়েডস। এর মূল, বীজ ও ফলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে। গাছটির বিভিন্ন অংশ থেকে সংগ্রহ করা লিপিড, কওমারিন্স ও তেল জাতীয় পদার্থ বায়োলজি ল্যাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজে ব্যবহার করা হয়। ফুল থেকে নিষ্কাষিত তেল প্রসাধনী ও সুগন্ধী প্রস্তুতিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কান্ড ও মূলের গুঁড়ো সুগন্ধ যুক্ত এবং নানা প্রসাধনী তৈরীতে বা সরাসরি রূপচর্চায় ব্যবহার করা হয়। কাঠ ও নানা দ্রব্য প্রস্তুতিতে লাগে। পুষ্পস্তবক তৈরি ও পুষ্পসজ্জায় কামিনীর পাতার ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়।
“কেন যামিনী না যেতে জাগালে না, বেলা হল মরি লাজে।
শরমে জড়িত চরণে কেমনে চলিব পথেরি মাঝে।।
আলোকপরশে মরমে মরিয়া হেরো গো শেফালি পড়িয়া ঝরিয়া,
কোনোমতে আছে পরান ধরিয়া কামিনী শিথিল সাজে।।”
শরমে জড়িত চরণে কেমনে চলিব পথেরি মাঝে।।
আলোকপরশে মরমে মরিয়া হেরো গো শেফালি পড়িয়া ঝরিয়া,
কোনোমতে আছে পরান ধরিয়া কামিনী শিথিল সাজে।।”
|| বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস ||
Kingdom : Plantae
Subkingdom : Viridiplantae
Infrakingdom : Streptophyta
Superdivision : Embryophyta
Division : Tracheophyta
Subdivision : Spermatophytina
Class : Magnoliopsida
Superorder : Rosanae
Order : Sapindales
Family : Rutaceae
Genus : Murraya
Species : Murraya paniculata
Subkingdom : Viridiplantae
Infrakingdom : Streptophyta
Superdivision : Embryophyta
Division : Tracheophyta
Subdivision : Spermatophytina
Class : Magnoliopsida
Superorder : Rosanae
Order : Sapindales
Family : Rutaceae
Genus : Murraya
Species : Murraya paniculata
Comments
Post a Comment