শিলাবতী বা শিলাই একটি নদীর নাম। এমনিতে শান্ত, কিন্তু বর্ষায় ভয়ঙ্কর।
পুরুলিয়ার মানভূম থেকে উৎপন্ন হয়ে রাঢ় বাংলার ল্যাটেরাইট ভূত্বকের উপর দিয়ে বয়ে চলে দ্বারকেশ্বর নদের সঙ্গে মিশে রূপনারায়ণ নাম নিয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে।
শীলাবতীর গভীর নদীখাত বা ক্যানিয়নের নাম গনগনি। একে বলা হয় বাংলার গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন। অপূর্ব সুন্দর সব প্রাকৃতিক ভাস্কর্য সেখানে।
গনগনি দেখে ফেরার ট্রেন ধরতে গড়বেতা রেল স্টেশনে বসে আছি। দেখি রেল লাইনের ওপারে সুন্দর একটি বাগান। বাগানে গোলাপ, ডালিয়ার সঙ্গে ছিল কিছু সবজির গাছ। তারই একটি এই রঙিন ফুলের মটরশুঁটি গাছ।
সাদা ফুলের মটরশুঁটি গাছের মতো এটিও একই গাছ, একই ফুল। শুধু রঙটিই যা আলাদা। ফলেও কোনো তারতম্য নেই।
Sweet pea নামে একটি গাছ আছে। তার ফুল দেখতে অবিকল এইরকম। কিন্তু সে গাছ শুঁটির জন্য চাষ করা হয় না, করা হয় ফুলের জন্য। সে হলো decorative ফুল, বাগানের শোভা। তার আবার মিষ্টি গন্ধ আছে। বৈজ্ঞানিক নামে (Lathyrus odoratus) সেই গন্ধের উল্লেখ আছে। তবে ফুলটির একটি দোষ আছে। Odoratism বা Osteolathyrism নামে একটি খারাপ অসুখের কারণ নাকি সেই ফুল।
সেকথা থাক।
আসলে এই ল্যাথিরাস শ্রেণীর সব ফুলই দেখতে একই রকম।
Lathyrus sativus বা grass pea হলো খেঁসারি কড়াই। সেই ফুলও গঠনে একই রকম। সে ফুল মিষ্টি পবিত্র নীল রঙের। খেঁসারি শাক কিনলে দুচারটি ফুল এমনিই চলে আসে। সবুজ ঘাসের মতো দেখতে শাকে একটি দুটি নীল ফুল ভারী সুন্দর দেখতে লাগে। আমি তো ওর বুকে অনন্ত নীল সমুদ্রের শোভা দেখি।
কিন্তু কি আশ্চর্য, সেই খেঁসারি থেকেও নাকি নানান অসুখ হতে পারে। আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের ওপর তার নাকি সরাসরি প্রভাব আছে। আমাদের locomotor neuron এর মৃত্যু ঘটিয়ে সে অঙ্গহানি ঘটাতে পারে। কিন্তু এদেশে কোটি কোটি মানুষ বছরের পর বছর খেঁসারির ডাল খেয়ে যায় বিনা প্রতিক্রিয়াতেই।
কি কথায় কি কথা এসে পড়ছে। সেসব থাক।
আমরা গড়বেতার ফুল দেখি।
Comments
Post a Comment