Skip to main content

কুরচি/গিরিমল্লিকা




কুরচি/গিরিমল্লিকা
বৈজ্ঞানিক নাম: Holarrhena pubescens
পরিচিতি:
বাংলাদেশ ও ভারতের প্রজাতি। ৬-৭ মিটার উচু পত্রমোচী গাছ। পাতা বেশ বড়, ১২-২০ সেমি লম্বা, ভল্লাকার বা লম্ব-ডিম্বাকার। বসন্তের শেষে সমস্ত গাছে ছোট ছোট থোকার সাদা ফুলে ভরে ওঠে এবং শরৎ পর্যন্ত কিছু গাছে ফুল দেখা যায়। ২-৪ সেমি চওড়া সুগন্ধি ফুলের ২-৩ সেমি লম্বা নলের আগায় ৫টি পাপড়ি বিদ্যমান । ফল সজোড়, সরু, ২০-৩৫ সেমি*৫-৬ মিমি। বীজ ১-১.৩ সেমি লম্বা, বাদামি রোমে জড়ানো। বীজ ও শিকড় থেকে গজান চারার মাধ্যমে চাষ।

কুরচি
বাংলা নাম : কুরচি, গিরিমল্লিকা, কুটজ, ইন্দ্রযব, ইন্দ্রজৌ, বৎসক, কলিঙ্গ, প্রাবৃষ্য, শত্রুপাদপ, সংগ্রাহী, পান্ডুরদ্রুম, মহাগন্ধ
ইংরেজি নাম : Bitter Oleander, Easter Tree, Connessi Bark, sentery Rose Bay, Tellicherry Bark
বৈজ্ঞানিক নাম : Holarrhena antidysenterica (Syn. H.pubescens)
মহাকবি কালীদাস আর কবিগুরু যে ফুলের বন্দনা করেছেন বারবার। মহাকবির মেঘদূত কাব্যে কুর্চির উল্লেখ আছে। কবিগুরু তার পুনশ্চ, শ্যামলী, বনবাণী ও আকাশ প্রদীপের অনেক জায়গায় কুচির বন্দনা করেছেন।বনবাণী গ্রন্থের কুরচি কবিতার কয়েকটি লাইন-
“ভ্রমর একদা ছিল পদ্মবনপ্রিয়,
ছিল প্রীতি কুমুদিনী পানে।
সহসা বিদেশে আসি, হায়, আজ কি ও
কূটজেও বহু বলি মানে!
কুরচি, তোমার লাগি পদ্মেরে ভুলেছে অন্যমনা
যে ভ্রমর , শুনি নাকি তারে কবি করেছে ভর্ৎসনা।“
বাংলাদেশ ও ভারতের প্রজাতি। শুভ্রতা ও সুগন্ধিতে এই ফুল অনন্য। ৬-৭ মিটার উচু ক্ষুদ্র আকৃতির পত্রমোচী বৃক্ষ। কাণ্ড সরল, বাকল অমসৃণ ও হালকা ধূসর রঙের। উপরের দিকে অজস্র ঊর্ধ্বমুখী শাখায় এলোমেলো। পাতা বেশ বড়, ১২-২০ সেমি লম্বা, ভল্লাকার বা লম্ব-ডিম্বাকারমসৃণ এবং উভয়ের বিপরীত দিকে সমভাবে বিন্যস্ত থাকে। শীতকালে এর সব পাতা ঝরে পড়ে।
ফাল্গুনের শেষভাগে দু-এক স্তবক কচি পাতার সঙ্গে ফুলগুলো ফুটতে শুরু করে। কুরচি মঞ্জরিতে ফুলসংখ্যা কম হলেও বিক্ষিপ্ত মঞ্জরির সংখ্যা অজস্র। বসন্তের শেষে সমস্ত গাছে ছোট ছোট থোকার সাদা ফুলে ভরে ওঠে এবং শরৎ পর্যন্ত কিছু গাছে ফুল দেখা যায়। ২-৪ সেমি চওড়া ফুলের ২-৩ সেমি লম্বা নলের আগায় ৫ পাপড়ি, সুগন্ধি। ফুলের নিচের অংশ নলাকৃতির, ওপরটা মুক্ত পাপড়িতে ছড়ানো। মুক্ত অংশটি আবার কিছুটা বাঁকানো। ফুলের বৃত্তাংশও পাঁচটি। ফল সজোড়, সরু, ২০-৩৫ সেমি*৫-৬ মিমি। বীজ ১-১.৩ সেমি লম্বা, রোমে জড়ানো। বীজ ও শিকড় থেকে গজান চারার মাধ্যমে চাষ।
কুরচি ভেষজমূল্যে সমৃদ্ধ। কুরচির ছালে রয়েছে হোলাডিনেমাইন, কুরচাসিন, কোনিমাইন, হোলডিসিন আর সিটেস্টেরল নামক অ্যালকালয়েড। ফুল, বাকল ও ফল থেকে মেলে আমাশয়ের, ডায়রিয়া ও রক্তপিত্তের ঔষধ। তাছাড়া ফুল রক্তদোষে, পাতা বাত ও ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসে, বীজ অর্শ্ব ও একজিমায় উপকারী। হাঁপানি রোগে শিকড়ের রস দারুণ উপকারী। কোষ্ঠকাঠিন্য, প্রস্রাবের জ্বালা-পোড়া, কৃমিরোগ ও মুখের ঘায়ে এর শিকড়, পাতা ও বাকল খুব কার্যকর! আমাদের দেশে সর্পদংশন এবং বিছার কামড়েও এ গাছের বাকল ব্যবহার করা হতো। আসামে কুরচি কাঠের কবজ ব্যবহার করার প্রচলন রয়েছে। তাছাড়া এর নরম কাঠ থেকে পুতুল ও খেলনা তৈরি হয়।
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
Kingdom Plantae
Subkingdom Tracheobionta
Superdivision Spermatophyta
Division Magnoliophyta
Class Magnoliopsida
Subclass Asteridae
Order Gentianales
Family Apocynaceae
Genus Holarrhena
Species Holarrhena antidysenterica

Comments

Popular posts from this blog

কুঞ্জলতা

|| কুঞ্জলতা || অন্যান্য নাম : কুঞ্জলতা, কামলতা, তারালতা, তরুলতা, গেইট লতা, সূর্যকান্তি, জয়ন্তী ফুল। ইংরেজি নাম : Cypress Vine, Cypressvine Morning Glory, Cardinal Creeper, Cardinal Climber, Cardinal Vine, Star Glory, Hummingbird Vine, Cupid's flower বৈজ্ঞানিক নাম : Ipomoea quamoclit কুঞ্জলতা একপ্রকার বর্ষজীবী লতা জাতীয় উদ্ভিদ। এর আদি নিবাস ক্রান্তীয় আমেরিকা হলেও এটি দুনিয়ার প্রায় সকল ক্রান্তীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়। অস্ট্রেলিয়া, ফিজি, ভিয়েতনাম, মেক্সিকো এবং আমাদের দেশেও ব্যাপক ভাবে এর দেখা মেলে। কুঞ্জলতা সাধারণত ১-৩ মিটার লম্বা হয়। কান্ড নরম সবুজ, সহজেই ভেঙে যায় তবে পরিনত হলে বাদামি রঙের ও তুলনায় পোক্ত হয়ে থাকে। এর কান্ড বল্লী ধরনের অর্থাৎ এদের কোন আকর্ষ থাকে না তাই কান্ডের সাহায্যে কোন অবলম্বন কে জড়িয়ে ওপরে ওঠে। কুঞ্জলতার পাতা গাঢ় সবুজ রঙের। পাতা সরল, একান্তর ভাবে সজ্জিত। পাতাগুলি ৫ – ৭.৫ সেমি লম্বা। পত্রকিনারা পালকের মতো গভীরভাবে খন্ডিত, পাতার প্রত্যেক পাশে ৯-১৯টি করে খন্ড থাকে। এরূপ খন্ডনের কারনে পাতাগুলিকে দেখতে লাগে অনেকটা ফার্ণের মত। ঘনভাবে লতানো কুঞ্জলতার পাতাও ...

সোনাঝুরি

সোনাঝুরি A cluster of flowers at the end of the blooming season. Acacia auriculiformis Family Fabaceae Khoai near Shantiniketan, West Bengal, India আকাশমণি অন্যান্য নাম : আকাশমণি, সোনাঝুরি ইংরেজি নাম : Auri, Earleaf Acacia, Earpod Wattle, Northern Black Wattle, Papuan Wattle, Tan Wattle বৈজ্ঞানিক নাম : Acacia auriculiformis আকাশমণি একটি দ্রুতবৃদ্ধিসম্পন্ন চিরহরিৎ বৃক্ষ। এটি অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও পাপুয়া নিউ গিনির স্থানীয় প্রজাতি। চিরসবুজ এই বৃক্ষটি ১৫-৩০মি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। কান্ড বহু শাখাপ্রশাখা যুক্ত। গাছের বাকল পরিণত অবস্থায় ছাই, বাদামি বা কালচে বাদামি রঙের এবং অমসৃণ ও ফাটল যুক্ত হয়। এই গাছের যেটাকে আমরা অনেকেই পাতা বলি সেটি আসলে পাতা নয়, এটি মূলত পর্ণবৃন্ত। বীজ অঙ্কুরিত হবার পর পক্ষল যৌগিক পত্র ধারণ করে, কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই পত্রকগুলি ঝরে পড়ে। এর পর যৌগিক পত্রের বৃন্ত পরিবর্তিত হয়ে প্রসারিত, চ্যাপ্টা পাতার মত আকার ধারণ করে ও পাতার মত কাজ করে। সবুজ পর্ণবৃন্তগুলি ৮-২০ সেমি লম্বা ও ১-৪ সেমি চওড়া এবং মসৃণ। প্রতি পর্ণবৃন্তে ৩-৮ টি সমান্তরাল ভাবে অবস্থিত...

ডেইজি

ডেইজি বৈজ্ঞানিক নাম : Bellis perenni পরিচিতি: দেখতে সাদা, মাঝখানে হলুদ ছোট ছোট অসংখ্য পাপড়ি দিয়ে একটি চোখের মতো আকৃতি তৈরি করে। ডেই ডেইজি ফুলটি ভোর থেকেই ফোটে, একে বলা হয় “দিনের চোখ”। গুনাগুন: এর অনেক গুনাগুন রয়েছে, যেমন খাদ্য হিশেবে ডেইজি ফুলের পাতা সালাদের সাথে খাওয়া যায়, এর পাতার মধ্যে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। ওষুধি গুনের দিক থেকে রক্তক্ষরণ কমানো, বদহজম এবং কফ কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। মৌমাছি ডেইজি ফুল খুব ভালবাসে এবং মধু তৈরিতে ভাল ভুমিকা রাখে।