Skip to main content

বাগান বিলাস / কাগজ ফুল




বাগান বিলাস
বৈজ্ঞানিক নাম: Bougainvillea spectabilis
পরিচিতি:
অবলম্বনের উপর নির্ভর করে গাছটি ১-১২ মিটার লম্বা হতে পারে। বাগান বিলাস তীক্ষ্ণ কাঁটাযুক্ত গাছ। বাগান বিলাসের কদর মূলত এর ফুলের কারণেই। ফুলগুলোর একটা থেকে আরেকটার দূরত্ব থাকে খুব কম; অর্থাৎ খুব ঘন সন্নিবিষ্ট। প্রতিটি ফুলে তিনটি পাপড়ি তিন দিক থেকে একে অপরকে ঘিরে থাকে। এর ভিতরে থাকে পুংকেশর, স্ত্রীকেশর ইত্যাদি।
পৃথিবী ব্যাপি বাগান বিলাসের ১৮টি পর্যন্ত প্রজাতির সন্ধান মেলে


বাগানবিলাস
অন্যান্য নাম : বাগানবিলাস, কাগজ ফুল,
ইংরেজি নাম : Bougainvillea, Paper Flower
বৈজ্ঞানিক নাম : Bougainvillea glabra
আমাদের খুবই পরিচিত একটা ফুল হলো বাগান বিলাস। আমদের দেশের মোটামুটি প্রায় সব জায়গায় এই গাছ চোখে পড়ে। বিশেষ করে বাড়ির সামনের গেট অথবা পার্কে। নাম শুনে এদেশি মনে হলেও বাগান বিলাস মূলত বিদেশি ফুল।উষ্ণ জলবায়ুপূর্ণ অধিকাংশ এলাকায় বাগানবিলাস শোভাবর্ধক গাছ হিসেবে অত্যন্ত পরিচিত। দক্ষিন আমেরিকার ব্রাজিল, পেরু, আর্জেন্টিনা বাগান বিলাসের আদি নিবাস। ফরাসী আবিস্কারক লুই অটোইন ডি বোগেনভিলিয়া'র নাম অনুসারে এ গাছের নামকরণ রাখা হয়েছে বোগেনভিলিয়া। ‘বোগেনভিলিয়া’ থেকে ‘বাগান বিলাস’; নামের এই বিবর্তনের মূল কৃতিত্ব রবীন্দ্রনাথের। অনেক প্রজাতির বাগানবিলাস রাষ্ট্রীয় প্রতীক হিসেবে গুয়াম দ্বীপপুঞ্জ, মাতসু দ্বীপপুঞ্জ, তাইওয়ানের পিংটুং কাউন্টি; মালয়েশিয়ার ইপোহ, ফিলিপাইনের তাগবিলরন, ক্যালিফোর্নিয়ার কেমারিলো, নাগুনা নিগুয়েল, স্যান ক্লিমেন্টে; চীনের গুয়াংডং প্রদেশের শেনঝেন, হুইঝো, ঝুহাই এবং জিয়াংমেন; ওকিনাওয়ার নাহায় প্রচলিত রয়েছে। পৃথিবী ব্যাপি বাগান বিলাসের ১৮টি পর্যন্ত প্রজাতির সন্ধান মেলে। সকল প্রজাতিগুলোর সকলেই ‘চার ঘন্টা পরিবার’ হিসেবে খ্যাত নাইক্টেগিনাসিয়া গোত্রের অন্তর্ভূক্ত।
বাগানবিলাস দীর্ঘপ্রসারী গুল্ম জাতীয় লতানে গাছ। লম্বায় এই গাছ ১-১২ মিটার পর্যন্ত হয়। কত উঁচু অবলম্বন ধরে বেড়ে উঠছে সম্পূর্ণ তার উপর নির্ভর করে কখনো কখনো ২০-৩০ মিটার লম্বাও হতে পারে। গাছ উপরে উঠতে না দিয়ে ছেঁটে দিলে ঝোপালো হয়ে ওঠে। বাগান বিলাস তীক্ষ্ণ কাঁটাযুক্ত গাছ। কাঁটার ডগায় কালো রঙের মোম জাতীয় পদার্থের আস্তরন থাকে। এর পাতার রং গাঢ় সবুজ। পাতা সরল, মসৃন, একান্তর ভাবে সজ্জিত, ডিম্বাকার ও সূচালো অগ্রপ্রান্ত বিশিষ্ট। পাতা ৪-১৩ সেমি লম্বা এবং ২-৬ সেমি চওড়া।
নামের মতোই দেখতেও অনিন্দ্য সুন্দর এই ফুল। জানুয়ারি-মার্চ ফুল ধরার প্রধান সময় কিন্তু কোনো কোনো জাতে প্রায় সারা বছরই অল্পসংখ্যক ফুল দেখা যায়। লাল, কমলা, হলুদ, সাদা, গোলাপী, বেগুনি বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে এই গাছের ফুল। কখনো কখনো একই গাছে দু রকম রঙের ফুলও দেখা যায়। ফুলগুলোর একটা থেকে আরেকটার দূরত্ব থাকে খুব কম। ফলে ফুল ফুটলে মনে হয় পুরো গাছ যেন ফুলে ছেয়ে রয়েছে। ফুল অত্যন্ত ছোট। সাধারনত সাদা রঙের। সংখ্যায় থাকে একসঙ্গে তিনটি। প্রতিটি ফুলের গোড়ায় উজ্জ্বল রঙের বৃহদাকার ৩-৬ টি মঞ্জরিপত্র থাকে যা ফুল গুলিকে ঘিরে থাকে। এর ভিতরে থাকে পুংকেশর, স্ত্রীকেশর ইত্যাদি। জাত অনুযায়ী মঞ্জরিপত্রের রঙ বহু রকমের হয়। মঞ্জরিপত্রগুলি কাগজের মত পাতলা হয় বলে এই গাছের অপর নাম কাগজ ফুল বা কাগজি ফুল। ফল সরু, ৫ লতি যুক্ত ও একটিমাত্র বীজ সম্বলিত।
এর কোন ভেষজ গুণের কথা আজ পর্যন্ত শোনা যায়নি। তবে এর ছাল থেকে বেরুনো রস ‘স্কিন র্যা শ’ সৃষ্টির জন্য দায়ী বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু ভেষজ গুণহীন হলেও আমাদের নাগরিক জীবনে এক ঝলক স্নিগ্ধতার পরশ বুলিয়ে দিতে বাগানবিলাসের জুড়ি নেই।
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
Kingdom - Plantae
Subkingdom - Tracheobionta
Superdivision - Spermatophyta
Division - Magnoliophyta
Class - Magnoliopsida
Subclass - Caryophyllidae
Order - Caryophyllales
Family - Nyctaginaceae
Genus - Bougainvillea
Species - Bougainvillea glabra

Comments

Popular posts from this blog

কুঞ্জলতা

|| কুঞ্জলতা || অন্যান্য নাম : কুঞ্জলতা, কামলতা, তারালতা, তরুলতা, গেইট লতা, সূর্যকান্তি, জয়ন্তী ফুল। ইংরেজি নাম : Cypress Vine, Cypressvine Morning Glory, Cardinal Creeper, Cardinal Climber, Cardinal Vine, Star Glory, Hummingbird Vine, Cupid's flower বৈজ্ঞানিক নাম : Ipomoea quamoclit কুঞ্জলতা একপ্রকার বর্ষজীবী লতা জাতীয় উদ্ভিদ। এর আদি নিবাস ক্রান্তীয় আমেরিকা হলেও এটি দুনিয়ার প্রায় সকল ক্রান্তীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়। অস্ট্রেলিয়া, ফিজি, ভিয়েতনাম, মেক্সিকো এবং আমাদের দেশেও ব্যাপক ভাবে এর দেখা মেলে। কুঞ্জলতা সাধারণত ১-৩ মিটার লম্বা হয়। কান্ড নরম সবুজ, সহজেই ভেঙে যায় তবে পরিনত হলে বাদামি রঙের ও তুলনায় পোক্ত হয়ে থাকে। এর কান্ড বল্লী ধরনের অর্থাৎ এদের কোন আকর্ষ থাকে না তাই কান্ডের সাহায্যে কোন অবলম্বন কে জড়িয়ে ওপরে ওঠে। কুঞ্জলতার পাতা গাঢ় সবুজ রঙের। পাতা সরল, একান্তর ভাবে সজ্জিত। পাতাগুলি ৫ – ৭.৫ সেমি লম্বা। পত্রকিনারা পালকের মতো গভীরভাবে খন্ডিত, পাতার প্রত্যেক পাশে ৯-১৯টি করে খন্ড থাকে। এরূপ খন্ডনের কারনে পাতাগুলিকে দেখতে লাগে অনেকটা ফার্ণের মত। ঘনভাবে লতানো কুঞ্জলতার পাতাও ...

সোনাঝুরি

সোনাঝুরি A cluster of flowers at the end of the blooming season. Acacia auriculiformis Family Fabaceae Khoai near Shantiniketan, West Bengal, India আকাশমণি অন্যান্য নাম : আকাশমণি, সোনাঝুরি ইংরেজি নাম : Auri, Earleaf Acacia, Earpod Wattle, Northern Black Wattle, Papuan Wattle, Tan Wattle বৈজ্ঞানিক নাম : Acacia auriculiformis আকাশমণি একটি দ্রুতবৃদ্ধিসম্পন্ন চিরহরিৎ বৃক্ষ। এটি অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও পাপুয়া নিউ গিনির স্থানীয় প্রজাতি। চিরসবুজ এই বৃক্ষটি ১৫-৩০মি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। কান্ড বহু শাখাপ্রশাখা যুক্ত। গাছের বাকল পরিণত অবস্থায় ছাই, বাদামি বা কালচে বাদামি রঙের এবং অমসৃণ ও ফাটল যুক্ত হয়। এই গাছের যেটাকে আমরা অনেকেই পাতা বলি সেটি আসলে পাতা নয়, এটি মূলত পর্ণবৃন্ত। বীজ অঙ্কুরিত হবার পর পক্ষল যৌগিক পত্র ধারণ করে, কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই পত্রকগুলি ঝরে পড়ে। এর পর যৌগিক পত্রের বৃন্ত পরিবর্তিত হয়ে প্রসারিত, চ্যাপ্টা পাতার মত আকার ধারণ করে ও পাতার মত কাজ করে। সবুজ পর্ণবৃন্তগুলি ৮-২০ সেমি লম্বা ও ১-৪ সেমি চওড়া এবং মসৃণ। প্রতি পর্ণবৃন্তে ৩-৮ টি সমান্তরাল ভাবে অবস্থিত...

ডেইজি

ডেইজি বৈজ্ঞানিক নাম : Bellis perenni পরিচিতি: দেখতে সাদা, মাঝখানে হলুদ ছোট ছোট অসংখ্য পাপড়ি দিয়ে একটি চোখের মতো আকৃতি তৈরি করে। ডেই ডেইজি ফুলটি ভোর থেকেই ফোটে, একে বলা হয় “দিনের চোখ”। গুনাগুন: এর অনেক গুনাগুন রয়েছে, যেমন খাদ্য হিশেবে ডেইজি ফুলের পাতা সালাদের সাথে খাওয়া যায়, এর পাতার মধ্যে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। ওষুধি গুনের দিক থেকে রক্তক্ষরণ কমানো, বদহজম এবং কফ কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। মৌমাছি ডেইজি ফুল খুব ভালবাসে এবং মধু তৈরিতে ভাল ভুমিকা রাখে।