Skip to main content

হুড়হুড়ি

হুড়হুড়ি
বৈজ্ঞানিক নাম: Cleome spinosa
পরিচিতি:
সুদূর দক্ষিণ আমেরিকা থেকে রীতিবদ্ধ বাগানের ফুল হিসেবে আমাদের দেশে আসা হুড়হুড়ি ফুল গাছটি আমাদের বাগান থেকেই বিভিন্ন জলাভূমির ধারে ছড়িয়ে পড়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে শীতের মৌসুমি ফুলের বাগানেও সমান উপস্থিতি চোখে পড়ে। বৃহত্তর সিলেটের বিল-হাওর ও নিম্নাঞ্চলে সংখ্যায় বেশি। গাছ ৯০-১২০ সেন্টিমিটার উঁচু। কাণ্ড সবুজ, কাঁটাযুক্ত, ঝোপাল। পাতার বোঁটা লম্বা, ফলক করতলাকারের মতো খণ্ডিত, লতি সংখ্যা পাঁচ। ডালের আগায় লম্বা মঞ্জরিদণ্ডে ফুল ফোটে পর্যায়ক্রমে। বোঁটা লম্বা, পাপড়ি খোলা, অসমান। ফুলের অনেক রং হালকা বেগুনি, বেগুনি, গোলাপি, সাদা প্রভৃতি। প্রস্ফুটনকাল দীর্ঘ—শীতের প্রথম ভাগ থেকে বর্ষা-শরৎ পর্যন্ত। বীজ দূরবাহী ও বৈরী পরিবেশে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে সক্ষম।

শ্বেত হুড়হুড়ে
অন্যান্য নাম : হুড়হুড়ে, নুনিরলতা, সূর্য্যাবর্ত্ত, হুলহুলে।
ইংরেজি নাম : Wild Spider Flower, African Spider-Flower, Cat Whiskers, Bastard-Mustard, Spiderwisp
বৈজ্ঞানিক নাম : Cleome gynandra
এমন অপরূপ ফুলের নাম এরকম কাটখোট্টা রকমের হতে পারে ভাবা যায় না। আদি নিবাস দক্ষিণ অ্যামেরিকা। যদিও বাংলার বাগানেতো বটেই বন জঙ্গলেও এ ফুলের দেখা মিলবে। বহু শাখাপ্রশাখায় বিস্তৃত ঝোপ আকৃতির গুল্ম জাতীয় গাছ। গাছ ৬০-৯০ সে.মি উঁচু হয়। কখনো ১২০ সে.মি পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। কাণ্ড সবুজ, শক্তপোক্ত, আঠালো এবং সুন্দর গন্ধযুক্ত। কাণ্ডের গায়ে কাঁটা থাকে।
পাতা একান্তর ভাবে সজ্জিত। পাতার বোঁটা লম্বা, ফলক করতলাকারের মতো খণ্ডিত। প্রতি পত্রদন্ডে ৩ - ৭ টি পত্রক আঙুলের মত ছড়ানো থাকে। ২-১০ সেমি লম্বা ও ২-৪ সেমি চওড়া পত্রকগুলি ডিম্বাকার বা উপবৃত্তাকার। পত্র কিনারা খুব সুক্ষ ভাবে করাতের মত দাঁড়া যুক্ত বা ঢেউ খেলানো। পাতা সবুজ, গোলাপী, বেগুনি রঙের হতে পারে। কাণ্ড ও পাতা উভয়ই খাওয়া যায়।
ডালের আগায় লম্বা মঞ্জরিদণ্ডে ফুল ফোটে পর্যায়ক্রমে। একটি পুষ্পদন্ডে অসংখ্য সাদা রঙের ফুল ফোটে। সাদা ছাড়াও ফুলের অনেক রং হতে পারে হালকা বেগুনি, বেগুনি, গোলাপি প্রভৃতি। বোঁটা লম্বা, পাপড়ি খোলা, অসমান। এই ফুলের লম্বা বোটাগুলো দেখতে অনেকটা মাকড়সার পায়ের মত। সেকারনেই হয়ত এ গাছের আরেক নাম স্পাইডার ট্রি। বৃতি ৫-৮ মি.মি। পাপড়ি ৪ টি, পুংকেশর ৬ টি। প্রস্ফুটনকাল দীর্ঘ—শীতের প্রথম ভাগ থেকে বর্ষা-শরৎ পর্যন্ত। বীজ দূরবাহী ও বৈরী পরিবেশে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে সক্ষম।
ফল লম্বা ৩০-৪৫ মি.মি লম্বা ও ৩ মি.মি প্রশস্ত, রোমশ এবং মাকু আকৃতির। ফলের ভেতর ১.৫ মিমি আকারের কালো বা বাদামি গুগলি বা শামুকের মত দেখতে বীজ থাকে। মূলত বীজের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করে। এক অর্থে এ প্রজাতি মরসুমিও বটে। এদের ভালব ও রাইজোম মাটির নিছে রয়ে যায় এবং তা গরমের ঋতুতে পুনরায় গাছে রূপান্তরিত হয়। প্রতি বছরই এমন করে নতুন গাছ গজায়। ফলে এর কন্দজ বিস্তারও সম্ভব।
এ গাছের কচি কাণ্ড খেলে গরমে শীতলতা বোধ হয়, ক্লান্তি দূর করে। এমনকি রক্তচাপ কমে যায় এক তৃতীয়াংশ পর্যন্ত! পাতা খিঁচুনিতে, কানের প্রদাহে, ফোড়া ও পোকামাকড়ের কামড়ের উপশমে ব্যাবহার করা হয়। বীজ গোল কৃমি প্রতিরোধে ভাল ফল দেয়।এই উদ্ভিদ থেকে যে তেল পাওয়া যায় তাতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, কীটনাশক এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবাইরাল উপাদান আছে। উচ্চমাত্রার সালফার-ডাই-অক্সাইড বা ক্লোরিন এর উপস্থিতিতেও এ গাছ টিকে থাকতে পারে। এছাড়াও এর আছে শক্তিশালী শোষণ ক্ষমতা, তাই এটি পরিবেশকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করার পাশাপাশি বায়ুকে পরিশোধন করে বাতাসকে নির্মল করে।
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
Kingdom Plantae
Subkingdom Tracheobionta
Superdivision Spermatophyta
Division Magnoliophyta
Class Magnoliopsida
Subclass Dilleniidae
Order Capparales
Family Capparaceae
Genus Cleome
Species Cleome gynandra

ফুলের নাম- স্পাইডার ফ্লাওয়ার
বৈজ্ঞানিক নাম- Cleome hassleriana
পরিবার- Cleomaceae
আমাদের দেশি বাগানের বেশ পুরাতন সদস্য স্পাইডার ফ্লাওয়ার। নার্সারিতে প্রায়ই চোখে পড়ে। গাছগুলো লম্বায় প্রায় ৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। করতলাকারে সজ্জিত পাতা গাছকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। লম্বা, খাড়া ডালের আগায় ফুল ফোঁটে, একসাথে অনেক, ফুল পর্যায়ক্রমে নিচ থেকে উপর দিকে ফোঁটে; নানা রঙ- বেগুনি, গোলাপি, সাদা। ফুল শেষে বীজধারণকারী ফল। বীজ থেকে নতুন চারা জন্মে।

Comments

Popular posts from this blog

কুঞ্জলতা

|| কুঞ্জলতা || অন্যান্য নাম : কুঞ্জলতা, কামলতা, তারালতা, তরুলতা, গেইট লতা, সূর্যকান্তি, জয়ন্তী ফুল। ইংরেজি নাম : Cypress Vine, Cypressvine Morning Glory, Cardinal Creeper, Cardinal Climber, Cardinal Vine, Star Glory, Hummingbird Vine, Cupid's flower বৈজ্ঞানিক নাম : Ipomoea quamoclit কুঞ্জলতা একপ্রকার বর্ষজীবী লতা জাতীয় উদ্ভিদ। এর আদি নিবাস ক্রান্তীয় আমেরিকা হলেও এটি দুনিয়ার প্রায় সকল ক্রান্তীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়। অস্ট্রেলিয়া, ফিজি, ভিয়েতনাম, মেক্সিকো এবং আমাদের দেশেও ব্যাপক ভাবে এর দেখা মেলে। কুঞ্জলতা সাধারণত ১-৩ মিটার লম্বা হয়। কান্ড নরম সবুজ, সহজেই ভেঙে যায় তবে পরিনত হলে বাদামি রঙের ও তুলনায় পোক্ত হয়ে থাকে। এর কান্ড বল্লী ধরনের অর্থাৎ এদের কোন আকর্ষ থাকে না তাই কান্ডের সাহায্যে কোন অবলম্বন কে জড়িয়ে ওপরে ওঠে। কুঞ্জলতার পাতা গাঢ় সবুজ রঙের। পাতা সরল, একান্তর ভাবে সজ্জিত। পাতাগুলি ৫ – ৭.৫ সেমি লম্বা। পত্রকিনারা পালকের মতো গভীরভাবে খন্ডিত, পাতার প্রত্যেক পাশে ৯-১৯টি করে খন্ড থাকে। এরূপ খন্ডনের কারনে পাতাগুলিকে দেখতে লাগে অনেকটা ফার্ণের মত। ঘনভাবে লতানো কুঞ্জলতার পাতাও ...

সোনাঝুরি

সোনাঝুরি A cluster of flowers at the end of the blooming season. Acacia auriculiformis Family Fabaceae Khoai near Shantiniketan, West Bengal, India আকাশমণি অন্যান্য নাম : আকাশমণি, সোনাঝুরি ইংরেজি নাম : Auri, Earleaf Acacia, Earpod Wattle, Northern Black Wattle, Papuan Wattle, Tan Wattle বৈজ্ঞানিক নাম : Acacia auriculiformis আকাশমণি একটি দ্রুতবৃদ্ধিসম্পন্ন চিরহরিৎ বৃক্ষ। এটি অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও পাপুয়া নিউ গিনির স্থানীয় প্রজাতি। চিরসবুজ এই বৃক্ষটি ১৫-৩০মি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। কান্ড বহু শাখাপ্রশাখা যুক্ত। গাছের বাকল পরিণত অবস্থায় ছাই, বাদামি বা কালচে বাদামি রঙের এবং অমসৃণ ও ফাটল যুক্ত হয়। এই গাছের যেটাকে আমরা অনেকেই পাতা বলি সেটি আসলে পাতা নয়, এটি মূলত পর্ণবৃন্ত। বীজ অঙ্কুরিত হবার পর পক্ষল যৌগিক পত্র ধারণ করে, কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই পত্রকগুলি ঝরে পড়ে। এর পর যৌগিক পত্রের বৃন্ত পরিবর্তিত হয়ে প্রসারিত, চ্যাপ্টা পাতার মত আকার ধারণ করে ও পাতার মত কাজ করে। সবুজ পর্ণবৃন্তগুলি ৮-২০ সেমি লম্বা ও ১-৪ সেমি চওড়া এবং মসৃণ। প্রতি পর্ণবৃন্তে ৩-৮ টি সমান্তরাল ভাবে অবস্থিত...

ডেইজি

ডেইজি বৈজ্ঞানিক নাম : Bellis perenni পরিচিতি: দেখতে সাদা, মাঝখানে হলুদ ছোট ছোট অসংখ্য পাপড়ি দিয়ে একটি চোখের মতো আকৃতি তৈরি করে। ডেই ডেইজি ফুলটি ভোর থেকেই ফোটে, একে বলা হয় “দিনের চোখ”। গুনাগুন: এর অনেক গুনাগুন রয়েছে, যেমন খাদ্য হিশেবে ডেইজি ফুলের পাতা সালাদের সাথে খাওয়া যায়, এর পাতার মধ্যে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। ওষুধি গুনের দিক থেকে রক্তক্ষরণ কমানো, বদহজম এবং কফ কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। মৌমাছি ডেইজি ফুল খুব ভালবাসে এবং মধু তৈরিতে ভাল ভুমিকা রাখে।