গামার (Gamhar) গাছের ফুল।
গামারের সংস্কৃত নামটি সুন্দর : মধুমতী।
দিলীপ কুমার ও বৈজয়ন্তী মালা বালি অভিনীত একটি হিন্দী ছবির নাম ছিল মধুমতী। সলিল চৌধুরীর সুরে সেই ছবির গানগুলি এখনো কি ভালো লাগে।
গামারের বৈজ্ঞানিক নাম Gmelina arborea.
কলকাতায় ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের পশ্চিম সীমানায় অনেকগুলি গামার গাছ সারি দিয়ে লাগানো হয়েছে। গাছগুলি এখনো বাচ্ছা। এই ফুল সেই সব গাছেরই।
গামার পর্ণমোচী বৃক্ষ। এখন তার পাতা ঝরানোর সময়। গাছ তাই এখন প্রায় নিষ্পত্র।
গামারের ছাল (bark) দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি ঔষুধগুনে ভরপুর। কত যে রোগের চিকিৎসায় কাজে লাগে তার শেষ নেই। গামারের কাঠ দিয়ে দরজা-জানালা, আসবাব ইত্যাদি তৈরি হয়।
গামারের সঙ্গে আমার পরিচয় খুব ছোটবেলায়। যে স্লেটে আমি লিখতে শিখি, তার ফ্রেম ছিল গামার কাঠে তৈরি। প্রায়শঃই সে কাঠ হতো কাঁচা। হাতে ধরে লিখতে লিখতে কচি হাতে হলুদ রং হয়ে যেত। তখনই জ্যাঠামশাইয়ের কাছে গামার নামটি প্রথম শোনা।
সেই ফ্রেমের কাঠ ক'দিন পরে একটু শুকিয়ে এলেই কোণগুলি আলগা হয়ে পাথর খুলে যেত। এমনি করে কত পাথরের স্লেট ভেঙে গেছে আমার!
ভাঙা স্লেটের টুকরোগুলি ছিল আমার খুব আগ্রহের জিনিস। খুব পাতলা পাতলা মসৃণ টুকরো হয়ে যেত। তাতে আবার প্রায়ই ছোট ছোট গাছের ছাপ দেখা যেত।
শ্যালে (shale) হলো একরকমের শিলা (rock); খুব মিহি কাদা স্তরে স্তরে জমে এই পাথর সৃষ্টি হয়। সেই শ্যালে আবার রূপান্তরিত (metamorphosis) হয়ে সৃষ্টি হয় স্লেট। তাই স্লেট ভেঙে গেলে ওই স্তর বরাবর ভেঙে যেত। ভূ-বিজ্ঞানে এর নাম fissility.
সে যাক। গামারের কাঠের ফ্রেমের কথা বলতে বলতে কি সব বাজে কথা এসে গেছে। ফুলের কথা বলি।
গামারের ফুলগুলি একটু অন্যরকম। দেখতে যেন ছোট্ট ছোট্ট বাদামী রঙের শিঙ্গার মতো। ফুলে একটি পাপড়ির রং হলুদ। সেটিই আবার সাইজে সবচেয়ে বড় এবং ফোটা ফুলে নিচের দিকে যেন ঝুলে থাকে।
কি আশ্চর্য!
Comments
Post a Comment