Skip to main content

কলাবতী




কলাবতী
বৈজ্ঞানিক নাম: Canna indica
পরিচিতি:
বর্ষার এক অনন্য ফুল। এর আরেক নাম সর্বজয়া। গ্রাম বাংলার আনাচে-কানাচে কিংবা শহরের বিলাসী বাগানে লাল-হলুদ এবং লাল ও হলুদ মেশানো কলাবতী ফুল পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এগুলো বীরুৎ জাতীয় উদ্ভিদ। দেখতে সরু, লম্বায় ৩ থেকে ৫ ফুট, পাতা দুই প্রান্তের দিকে চাপা, মাঝখানে প্রশস্ত। এগুলো একবীজপত্রী উদ্ভিদ। ৩টি বৃন্তযুক্ত এই ফুলে ৫টি পাপড়ি রয়েছে। ফুলের মাঝখানে দণ্ডায়মান বৃহৎ পুংকেশর। ফুলের আকৃতি গোড়ার দিকে সরু অগ্রভাগ ছড়ানো।

কলাবতী ||
বাংলা নাম : কলাবতী, সর্বজয়া, বৈজয়ন্তী
ইংরেজি নাম : saka siri, Indian shot, canna, bandera, chancle, coyol, platanillo
বৈজ্ঞানিক নাম : Canna indica
বর্ষার এক অনন্য ফুল। কলাবতী ফুল- হাসিতে মুগ্ধ হয়ে রবি ঠাকুর যার নাম দিয়েছিলেন "সর্বজয়া”। কলাবতী যে কোনও পরিবেশে বেশ স্বাচ্ছন্দে বেড়ে উঠতে পারে। স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় জন্মে। গ্রাম বাংলার আনাচে-কানাচে কিংবা শহরের বিলাসী বাগানে লাল-হলুদ এবং লাল ও হলুদ মেশানো কলাবতী ফুল সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এদের আদিভূমি হচ্ছে ক্যারিবীয় অঞ্চল ও আমেরিকার ক্রান্তীয় অঞ্চল। বর্ণবৈচিত্র্য ও দীর্ঘ স্থায়িত্বের কারণে অবহেলিত এই ফুল এখন উদ্যানেও স্থান করে নিয়েছে।
কলাবতী একটি কন্দ জাতীয় বহুবর্ষজীবি, একবীজপত্রী উদ্ভিদ। গাছ ৩-৪ ফুট উঁচু হয়। কান্ড বিরুৎ জাতীয় সবুজ রঙের এবং মসৃণ। পাতার গঠন অনেকটা কলাপাতার মতো কিংবা হলুদ পাতার মতো। তাই এর নাম কলাবতী। পাতা উপবৃত্তাকার, ২০-৬০ সেমি লম্বা ও ১০-৩০ সেমি চওড়া সবুজ ও তামাটে।পাতার অগ্রভাগ ক্রমশ সুচালো এবং গোড়ার অংশ কান্ডকে ঘিরে থাকে।
ফুল ফোটার সময় বর্ষা হলেও বর্ষার আগে পরে অনেকদিন ফুল থাকে। ফুলের রঙ সাধারণত লাল, হলুদ বা লাল-হলুদ মেশানো হয়। লম্বা পুষ্পদন্ডের অগ্রভাগে গুচ্ছাকারে ৬-২০টি ফুল ফোটে। ফুলের আকৃতি গোড়ার দিকে সরু অগ্রভাগ ছড়ানো। ফুলে ৫টি পাপড়ি দেখা গেলেও সেগুলি আসল পাঁপড়ি নয়। পুংকেশর পরিবর্তিত হয়ে ছদ্ম পাঁপড়ির রূপ নেয়। আসল পাঁপড়ির সংখ্যা ৩টি, ছোট পাতার মত দেখতে, ৪-৬ সেমি লম্বা। যা এই নকল পাঁপড়ির নিচে থাকে। ফুল ক্লীব জাতীয়।
ফুল শুকিয়ে গেলে গোলাকার সবুজ বা বেগুনি রঙের ১.৫-৩ সেমি দীর্ঘ ফল ধরে। ফল পরিণত হলে বাদামি বর্ণের হয় ও তা ফেটে ভেতর থেকে কালো, মসৃন গোলাকার বা ডিম্বাকার বীজ বেরিয়ে আসে। কন্দ ও বীজের মাধ্যমে বংশবিস্তার। গাছ শুকিয়ে গেলেও মাটির নিচে কন্দ সতেজ থাকে। এ কারণে শীতঘুম শেষে কিংবা কোনো প্রতিকুল অবস্থায় নিজেকে রক্ষা করতে পারে কলাবতী। টবেও চাষযোগ্য। তবে ছায়া খুব বেশি পছন্দ নয়।
এ ফুলের রয়েছে অনেক ভেষজ গুণ। ঘা শুকানো এবং দেহে শক্তি ও স্ফুর্তি সৃষ্টির জন্য এর বীজ উপকারী। মহিলাদের বিভিন্ন চিকিৎসায়, ব্যথা উপশমে এবং বিরেচক হিসাবে এর ব্যবহার রয়েছে। এছাড়া মূল খাদ্য এবং পাতার তন্তু কাগজ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
Kingdom Plantae
Subkingdom Viridiplantae
Infrakingdom Streptophyta
Superdivision Embryophyta
Division Tracheophyta
Subdivision Spermatophytina
Class Magnoliopsida
Superorder Lilianae
Order Zingiberales
Family Cannaceae
Genus Canna
Species Canna indica

Comments

Popular posts from this blog

কুঞ্জলতা

|| কুঞ্জলতা || অন্যান্য নাম : কুঞ্জলতা, কামলতা, তারালতা, তরুলতা, গেইট লতা, সূর্যকান্তি, জয়ন্তী ফুল। ইংরেজি নাম : Cypress Vine, Cypressvine Morning Glory, Cardinal Creeper, Cardinal Climber, Cardinal Vine, Star Glory, Hummingbird Vine, Cupid's flower বৈজ্ঞানিক নাম : Ipomoea quamoclit কুঞ্জলতা একপ্রকার বর্ষজীবী লতা জাতীয় উদ্ভিদ। এর আদি নিবাস ক্রান্তীয় আমেরিকা হলেও এটি দুনিয়ার প্রায় সকল ক্রান্তীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়। অস্ট্রেলিয়া, ফিজি, ভিয়েতনাম, মেক্সিকো এবং আমাদের দেশেও ব্যাপক ভাবে এর দেখা মেলে। কুঞ্জলতা সাধারণত ১-৩ মিটার লম্বা হয়। কান্ড নরম সবুজ, সহজেই ভেঙে যায় তবে পরিনত হলে বাদামি রঙের ও তুলনায় পোক্ত হয়ে থাকে। এর কান্ড বল্লী ধরনের অর্থাৎ এদের কোন আকর্ষ থাকে না তাই কান্ডের সাহায্যে কোন অবলম্বন কে জড়িয়ে ওপরে ওঠে। কুঞ্জলতার পাতা গাঢ় সবুজ রঙের। পাতা সরল, একান্তর ভাবে সজ্জিত। পাতাগুলি ৫ – ৭.৫ সেমি লম্বা। পত্রকিনারা পালকের মতো গভীরভাবে খন্ডিত, পাতার প্রত্যেক পাশে ৯-১৯টি করে খন্ড থাকে। এরূপ খন্ডনের কারনে পাতাগুলিকে দেখতে লাগে অনেকটা ফার্ণের মত। ঘনভাবে লতানো কুঞ্জলতার পাতাও ...

সোনাঝুরি

সোনাঝুরি A cluster of flowers at the end of the blooming season. Acacia auriculiformis Family Fabaceae Khoai near Shantiniketan, West Bengal, India আকাশমণি অন্যান্য নাম : আকাশমণি, সোনাঝুরি ইংরেজি নাম : Auri, Earleaf Acacia, Earpod Wattle, Northern Black Wattle, Papuan Wattle, Tan Wattle বৈজ্ঞানিক নাম : Acacia auriculiformis আকাশমণি একটি দ্রুতবৃদ্ধিসম্পন্ন চিরহরিৎ বৃক্ষ। এটি অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও পাপুয়া নিউ গিনির স্থানীয় প্রজাতি। চিরসবুজ এই বৃক্ষটি ১৫-৩০মি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। কান্ড বহু শাখাপ্রশাখা যুক্ত। গাছের বাকল পরিণত অবস্থায় ছাই, বাদামি বা কালচে বাদামি রঙের এবং অমসৃণ ও ফাটল যুক্ত হয়। এই গাছের যেটাকে আমরা অনেকেই পাতা বলি সেটি আসলে পাতা নয়, এটি মূলত পর্ণবৃন্ত। বীজ অঙ্কুরিত হবার পর পক্ষল যৌগিক পত্র ধারণ করে, কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই পত্রকগুলি ঝরে পড়ে। এর পর যৌগিক পত্রের বৃন্ত পরিবর্তিত হয়ে প্রসারিত, চ্যাপ্টা পাতার মত আকার ধারণ করে ও পাতার মত কাজ করে। সবুজ পর্ণবৃন্তগুলি ৮-২০ সেমি লম্বা ও ১-৪ সেমি চওড়া এবং মসৃণ। প্রতি পর্ণবৃন্তে ৩-৮ টি সমান্তরাল ভাবে অবস্থিত...

ডেইজি

ডেইজি বৈজ্ঞানিক নাম : Bellis perenni পরিচিতি: দেখতে সাদা, মাঝখানে হলুদ ছোট ছোট অসংখ্য পাপড়ি দিয়ে একটি চোখের মতো আকৃতি তৈরি করে। ডেই ডেইজি ফুলটি ভোর থেকেই ফোটে, একে বলা হয় “দিনের চোখ”। গুনাগুন: এর অনেক গুনাগুন রয়েছে, যেমন খাদ্য হিশেবে ডেইজি ফুলের পাতা সালাদের সাথে খাওয়া যায়, এর পাতার মধ্যে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। ওষুধি গুনের দিক থেকে রক্তক্ষরণ কমানো, বদহজম এবং কফ কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। মৌমাছি ডেইজি ফুল খুব ভালবাসে এবং মধু তৈরিতে ভাল ভুমিকা রাখে।