Skip to main content

Bel, বেল, Arabian jasmine (Jasminum sambac)




Bel, বেল, Arabian jasmine (Jasminum sambac)

বেলী
ইংরেজি নাম: Arabian jasmine
বৈজ্ঞানিক নাম: Jasminum sambac
পরিচিতি:
জেসমিন গণের এক প্রকারের সুগন্ধী সাদা ফুল। এই প্রজাতির গাছের উচ্চতা এক মিটার হতে পারে। এদের কচি ডাল রোমশ। পাতা একক, ডিম্বাকার, ৪-৮ সেমি লম্বা হয়। পাতা গাঢ়-সবুজ এবং মসৃণ। গ্রীষ্ম ও বর্ষায় একটি থোকায় কয়েকটি ফুল ফোটে। ফুলের আকার ও গড়ন অনুসারে কয়েকটি জাত আছে। কলম ও শিকড় থেকে গজান চারায় চাষ করা যায়। শীতকালে ছেঁটে দেয়া লাগে এবং টবেও ভালোভাবে জন্মান যায়।


|| বেলী ফুল ||
অন্যান্য নাম : বেলী, মল্লিকা, বার্ষিকী, মোতিয়া, মোগরা, বনমল্লিকা, চাম্বা।
ইংরেজি নাম : Arabian Jasmine, Sambac jasmine, Grand Duke, Grand Duke of Tuscany, Flore Pleno
বৈজ্ঞানিক নাম : Jasminum sambac
‘’বেলি ফুল এনে দাও চাই না বকুল
চাই না হেনা, আনো আমের মুকুল।।’’
দিনমান আকাশে মেঘের আনাগোনা। কখনও ঝমঝম ধারায় কখনও ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টিতে আঁকা হতে থাকে প্রকৃতির জলছবি। চারদিকে গাঢ় সবুজের সমারোহ। ভেজা বাতাসে রকমারি বর্ষা ফুলের সৌরভ। এমন বর্ষা মুখর দিনের সাজসজ্জার অন্যতম অনুষঙ্গ হতে পারে ঋতুপ্রধান এই ফুলগুলো। খোঁপায় একগুচ্ছ বেলী ফুল আপনার সাজে এনে দিতে পারে বর্ষার নান্দনিকতা।
বেলীর আবেদন নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। বর্ষায় এর মনমাতানো সুগন্ধে ভরে থাকে চারপাশ। সাদার শুভ্রতায় ফুরফুরে হয়ে ওঠে মন। বেলী জেসমিন গণের এক প্রকারের সুগন্ধী সাদা ফুল। এই গণের অধীনে ২০০ প্রজাতির সুগন্ধি উদ্ভিদ রয়েছে। ফুলটির ইংরেজী নাম Arabian jasmine হওয়ার কারণে এর আদি নিবাস আরব মনে হলেও আসলে এর আদি নিবাস দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়া, মূলত ভারত ও চিন। পরবর্তি কালে এখান থেকেই সারা পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান যেমন আরব, আমেরিকা, জামাইকা, মাদাগাস্কার, মরিশাস প্রভৃতিতে ছড়িয়ে পড়ে। এই ফুলটি বর্তমানে ফিলিপাইন ও ইন্দোনেশিয়ায় জাতীয় ফুল হিসেবে বিবেচিত হয়।
বেলী ফুলের গাছ বেশ ছোট; ঝোপের মতো এক ধরনের গুল্ম জাতীয় গাছ। কোনো কোনো জাতের বেলী লতা জাতীয় গাছ। গাছ উচ্চতায় ০.৫ মি. থেকে প্রায় ৩ মি. পর্যন্ত হতে পারে। কান্ড সরু দুর্বল দুপাশে হেলে পড়ে। এদের কচি ডাল রোমশ।
পাতা একক, ডিম্বাকার বা গোলাকার, ৪-৮ সেমি লম্বা, গাঢ়-সবুজ, মসৃণ। শাখার দুপাশে বিপরীত ভাবে জোড়ায় জোড়ায় পাতাগুলি বিন্যস্ত থাকে।
উজ্জল সবুজ পাতার মাঝে সাদা রঙের থোকায় থোকায় ফুটে থাকা বেলী ফুল দেখতে খুবই সুন্দর। এর মনমাতানো সুগন্ধে ভরে থেকে চারপাশ। বেলী ফুল ফাল্গুন চৈত্র মাসে ফুটতে শুরু করে এবং বর্ষা অবধি ফোটে। এই ফুল রাতে ফুটতে শুরু করে, সকালে পুরোপুরি পাঁপড়ি মেলে আর দুপুরের মধ্যেই ঝরে যায়। এ ফুলের রং সাধারণত সাদা ও হালকা ঘিয়ে মেশানো সাদা হয়ে থাকে। সাধারণত শাখার শীর্ষে একক বা ৩ – ১২টির গুচ্ছে ফুল ফোটে। বৃত্যাংশের সংখ্যা ৮ থেকে ১০টি। পাঁপড়ির সংখ্যা প্রজাতি অনুসারে ৫ বা তার অধিক। পাঁপড়ি সুবিন্যস্ত, নরম, মসৃণ, তীব্র সুগন্ধযুক্ত। প্রস্ফুটিত ফুলের ব্যাস ২ – ৩ সেমি। ফুলে থেকে ২টি পুংকেশর ও একটি দ্বিখন্ডিত মস্তক গর্ভকেশর। ফুলের আকার ও গড়ন অনুসারে বেশ কয়েকটি জাত আছে। সাধারণত যে ৪ শ্রেণীর বেলীর সঙ্গে আমরা পরিচিতঃ
১. রাই বেলীঃ এ জাতের বেলী দেড় থেকে দু'হাত লম্বা হয়। পাঁপড়ি সুসজ্জিত, ফুল খুব ছোট কিন্তু গন্ধ খুব উগ্র।
২. খয়ে বেলীঃ ছোট গাছ। ফুল ফোটে অজস্র। তীব্র সুগন্ধিযুক্ত। মালা তৈরিতে এর ব্যবহার ব্যাপক।
৩. মতিয়া বেলীঃ এ জাতের বেলী ফুলের আকার বড়ো হয়। অসংখ্য পাঁপড়ি এবং থোকায় থোকায় ফুল ধরে। ফুল মনোরম গন্ধযুক্ত।
৪. ভরিয়া বেলীঃ এ জাতের বেলীকে বলা হয় রাজা বেলী। ফুলের ওজন ১ ভরি। গড়ন ও গন্ধ মনোমুগ্ধকর। সাদা রঙের তীব্র সুগন্ধযুক্ত মালা গাঁথার বিশেষ উপযোগী।
বেলী ফুলের গাছে সাধারণত ফলের দেখা মেলে না। তবে ফল যে একেবারেই দেখা যায় না তেমন নয়। ফল খুবই ছোট, ১ সেমি ব্যাস বিশিষ্ট, গোলাকার, বেগুনী বা কালো রঙের হয়ে থাকে। ফলে বীজের সংখ্যা ১-২ টি, রঙ কালো, গোলাকার। বীজের এই দুস্প্রাপ্যতার কারণেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বেলী কলম ও শিকড় থেকে গজান চারায় চাষ করা হয়।
সাজসজ্জা বা সুগন্ধী হিসেবে বেলীর ব্যপক ব্যবহারের সাথে সাথে নানান রোগের চিকিৎসাতেও এর যথেষ্ট কদর রয়েছে। বেলীর সুগন্ধ স্নায়ুচাপ কমিয়ে ক্লান্তি ও অবসাদ দূর করে। বেলীর ফুল জন্ডিস রোগে এবং যৌন রোগ সারাতে ব্যবহার করা হয়। ফুলের কুঁড়ি আলসার, ফোড়া, চর্মরোগ এবং চোখের অসুখে কাজে লাগে। পাতার রস ব্রেস্ট টিউমারে ও পাতার কাত্থ জীবাণুনাশক হিসেবে ক্ষত ও ফোড়ায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বেলী ফুলের চা পাচন সহায়ক হিসেবে, জ্বর সারাতে, ও মুত্রনালীর সংক্রমন নিরাময়ে কাজ করে। তবে বেলীর সমস্ত ভেষজগুণ কে দূরে সরিয়ে রাখলেও শুধুমাত্র সাজার জন্যই হোক কিংবা মাতাল করা গন্ধের কারণেই, বেলি ফুল প্রিয় সবারই। হাজারো আধুনিক সৌন্দর্যের মধ্যে এটি আজও অনন্য।
|| বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস ||
Kingdom : Plantae
Subkingdom : Viridiplantae
Infrakingdom : Streptophyta
Superdivision : Embryophyta
Division : Tracheophyta
Subdivision : Spermatophytina
Class : Magnoliopsida
Superorder : Asteranae
Order : Lamiales
Family : Oleaceae
Genus : Jasminum
Species : Jasminum sambac

Comments

Popular posts from this blog

কুঞ্জলতা

|| কুঞ্জলতা || অন্যান্য নাম : কুঞ্জলতা, কামলতা, তারালতা, তরুলতা, গেইট লতা, সূর্যকান্তি, জয়ন্তী ফুল। ইংরেজি নাম : Cypress Vine, Cypressvine Morning Glory, Cardinal Creeper, Cardinal Climber, Cardinal Vine, Star Glory, Hummingbird Vine, Cupid's flower বৈজ্ঞানিক নাম : Ipomoea quamoclit কুঞ্জলতা একপ্রকার বর্ষজীবী লতা জাতীয় উদ্ভিদ। এর আদি নিবাস ক্রান্তীয় আমেরিকা হলেও এটি দুনিয়ার প্রায় সকল ক্রান্তীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়। অস্ট্রেলিয়া, ফিজি, ভিয়েতনাম, মেক্সিকো এবং আমাদের দেশেও ব্যাপক ভাবে এর দেখা মেলে। কুঞ্জলতা সাধারণত ১-৩ মিটার লম্বা হয়। কান্ড নরম সবুজ, সহজেই ভেঙে যায় তবে পরিনত হলে বাদামি রঙের ও তুলনায় পোক্ত হয়ে থাকে। এর কান্ড বল্লী ধরনের অর্থাৎ এদের কোন আকর্ষ থাকে না তাই কান্ডের সাহায্যে কোন অবলম্বন কে জড়িয়ে ওপরে ওঠে। কুঞ্জলতার পাতা গাঢ় সবুজ রঙের। পাতা সরল, একান্তর ভাবে সজ্জিত। পাতাগুলি ৫ – ৭.৫ সেমি লম্বা। পত্রকিনারা পালকের মতো গভীরভাবে খন্ডিত, পাতার প্রত্যেক পাশে ৯-১৯টি করে খন্ড থাকে। এরূপ খন্ডনের কারনে পাতাগুলিকে দেখতে লাগে অনেকটা ফার্ণের মত। ঘনভাবে লতানো কুঞ্জলতার পাতাও ...

সোনাঝুরি

সোনাঝুরি A cluster of flowers at the end of the blooming season. Acacia auriculiformis Family Fabaceae Khoai near Shantiniketan, West Bengal, India আকাশমণি অন্যান্য নাম : আকাশমণি, সোনাঝুরি ইংরেজি নাম : Auri, Earleaf Acacia, Earpod Wattle, Northern Black Wattle, Papuan Wattle, Tan Wattle বৈজ্ঞানিক নাম : Acacia auriculiformis আকাশমণি একটি দ্রুতবৃদ্ধিসম্পন্ন চিরহরিৎ বৃক্ষ। এটি অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও পাপুয়া নিউ গিনির স্থানীয় প্রজাতি। চিরসবুজ এই বৃক্ষটি ১৫-৩০মি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। কান্ড বহু শাখাপ্রশাখা যুক্ত। গাছের বাকল পরিণত অবস্থায় ছাই, বাদামি বা কালচে বাদামি রঙের এবং অমসৃণ ও ফাটল যুক্ত হয়। এই গাছের যেটাকে আমরা অনেকেই পাতা বলি সেটি আসলে পাতা নয়, এটি মূলত পর্ণবৃন্ত। বীজ অঙ্কুরিত হবার পর পক্ষল যৌগিক পত্র ধারণ করে, কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই পত্রকগুলি ঝরে পড়ে। এর পর যৌগিক পত্রের বৃন্ত পরিবর্তিত হয়ে প্রসারিত, চ্যাপ্টা পাতার মত আকার ধারণ করে ও পাতার মত কাজ করে। সবুজ পর্ণবৃন্তগুলি ৮-২০ সেমি লম্বা ও ১-৪ সেমি চওড়া এবং মসৃণ। প্রতি পর্ণবৃন্তে ৩-৮ টি সমান্তরাল ভাবে অবস্থিত...

ডেইজি

ডেইজি বৈজ্ঞানিক নাম : Bellis perenni পরিচিতি: দেখতে সাদা, মাঝখানে হলুদ ছোট ছোট অসংখ্য পাপড়ি দিয়ে একটি চোখের মতো আকৃতি তৈরি করে। ডেই ডেইজি ফুলটি ভোর থেকেই ফোটে, একে বলা হয় “দিনের চোখ”। গুনাগুন: এর অনেক গুনাগুন রয়েছে, যেমন খাদ্য হিশেবে ডেইজি ফুলের পাতা সালাদের সাথে খাওয়া যায়, এর পাতার মধ্যে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। ওষুধি গুনের দিক থেকে রক্তক্ষরণ কমানো, বদহজম এবং কফ কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। মৌমাছি ডেইজি ফুল খুব ভালবাসে এবং মধু তৈরিতে ভাল ভুমিকা রাখে।