
Akanda, আকন্দ, Crown flower (Calotropis gigantea)
আকন্দ:
বৈজ্ঞানিক নাম : Calotropis gigantea
আকন্দ এক প্রকার গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। এই গাছ সাধারণত: ৩-৪ মিটার পর্যন্ত উচুঁ হয়ে থাকে। আকন্দ দুই ধরণের গাছ শ্বেত আকন্দ ও লাল আকন্দ। শ্বেত আকন্দের ফুলের রং সাদা ও লাল আকন্দের ফুলের রং বেগুনি রং এর হয়ে থাকে। গাছের পাতা ছিড়লে কিংবা কান্ড ভাঙ্গলে দুধের মত কষ (তরুক্ষীর) বের হয়। ফলসবুজ,অগ্রভাগ দেখতে পাখির ঠোটের মত। বীজ লোম যুক্ত,বীজের বর্ণ ধুসর কিংবা কালচে হয়ে থাকে।
গুনাগুন:
বায়ুনাশক, উদ্দিপক, পাচক, পাকস্থলীর ব্যাথা নিবারক, বিষনাশক, ফোলা নিবারক। প্লীহা, দাদ, শোথ, অর্শ, ক্রিমি ও শ্বাসকষ্টে উপকারী। ইহার ফুল ডায়েবেটিস এর জন্যে বিশেষ উপকারী বলে মনে করা হয়।
বায়ুনাশক, উদ্দিপক, পাচক, পাকস্থলীর ব্যাথা নিবারক, বিষনাশক, ফোলা নিবারক। প্লীহা, দাদ, শোথ, অর্শ, ক্রিমি ও শ্বাসকষ্টে উপকারী। ইহার ফুল ডায়েবেটিস এর জন্যে বিশেষ উপকারী বলে মনে করা হয়।
|| আকন্দ ফুল ||
অন্যান্য নাম : আকন্দ, অর্ক, রাজার্ক, অলর্ক, অর্ককান্তা, সদাপুষ্প, দীর্ঘপুষ্প
ইংরেজি নাম : Milkweed, Madar, Crown Flower, Giant Calotrope, Giant Milkweed, Bowstring hemp, Giant Milk Weed, Gigantic swallow wort
বৈজ্ঞানিক নাম : Calotropis gigantea
ইংরেজি নাম : Milkweed, Madar, Crown Flower, Giant Calotrope, Giant Milkweed, Bowstring hemp, Giant Milk Weed, Gigantic swallow wort
বৈজ্ঞানিক নাম : Calotropis gigantea
“সম্মুখপানে দেখো দেখি চেয়ে,
ফাল্গুনে তব প্রাঙ্গণ ছেয়ে
বনফুলদল ঐ এল ধেয়ে
উল্লাসে চারিধারে।
দক্ষিণ বায়ে কোন আহবান
শূন্যে জাগায় বন্দনাগান,
কী খেয়াতরীর পায় সন্ধান
আসে পৃথ্বীর পারে?
গন্ধের থালি বর্ণের ডালি
আনে নির্জন অঙ্গনে,
জীর্ণ হে তুমি দীর্ণ দেবতালয়,
বকুল শিমুল আকন্দ ফুল
কাঞ্চন জবা রঙ্গনে
পূজা-তরঙ্গ দুলে অম্বরময়।”
ফাল্গুনে তব প্রাঙ্গণ ছেয়ে
বনফুলদল ঐ এল ধেয়ে
উল্লাসে চারিধারে।
দক্ষিণ বায়ে কোন আহবান
শূন্যে জাগায় বন্দনাগান,
কী খেয়াতরীর পায় সন্ধান
আসে পৃথ্বীর পারে?
গন্ধের থালি বর্ণের ডালি
আনে নির্জন অঙ্গনে,
জীর্ণ হে তুমি দীর্ণ দেবতালয়,
বকুল শিমুল আকন্দ ফুল
কাঞ্চন জবা রঙ্গনে
পূজা-তরঙ্গ দুলে অম্বরময়।”
আকন্দ এক প্রকার বর্ষজীবি গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। অযত্নে অবহেলায় নিজ শক্তিতে বেড়ে উঠা এই আকন্দ কিন্তু আমাদের বড়ই উপকারী। আদি নিবাস কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালেশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মায়ানমার, নেপাল, চীন, শ্রীলঙ্কা ও ক্রান্তীয় আফ্রিকা। থাইল্যান্ডে আকন্দ ফুল ভালোবাসার প্রতীক। তাদের বিয়ের অনুষ্ঠানে এই ফুল ব্যবহারের চল রয়েছে। এরা সাধারণত ভাঁটফুল বা কালকসুন্দার মত ঘন ঝোপের ভেতর জন্মায় না। পথের দুপাশে এবং পরিত্যক্ত স্থানে এদের দেখা মেলে সবচেয়ে বেশি। বেশি ছায়া পছন্দ করে না এরা। তাই বড় বড় গাছের নিচে এদের কম দেখা যায়। এ গাছের পাতা ছিঁড়লে কিংবা কান্ড ভাঙ্গলে দুধের মত কষ (তরুক্ষীর) বের হয়।
আকন্দ গাছ প্রায় ৬-৭ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। তবে কাণ্ড নরম। ফুল আর ফলের ভারে হেলে পড়া ভাব দেখা যায়। আকন্দের কাণ্ডের রং সাদাটে সবুজ। নরম এবং কচি শাখা রোমশ। তবে গাছ পরিণত হলে কিছুটা শক্ত হয়ে যায়। ঝোপ জাতীয় উদ্ভিদ হলেও এর কাণ্ড থেকে কোনো ডালপালা বের হয় না। মূল থেকে একাধিক কাণ্ড বেরিয়ে ঝোপ তৈরি করে। কাণ্ডের বেড় ১-৩ ইঞ্চি।
আকন্দের পাতা অনেকটা বটের পাতার মতো। পাতা পুরু এবং খুবই নরম, হালকা বা সাদাটে সবুজ রঙের এবং মসৃণ ও পাতার নীচের দিক তুলোর মত রোমে আচ্ছাদিত। আকন্দের পাতা সরল, উপবৃত্তাকার, বিপরীত ভাবে সজ্জিত, লম্বায় ৬-৮ ইঞ্চি ও ঠিক মাঝ বরাবর পাতার প্রস্থ ৩-৪ ইঞ্চি। বৃন্ত ক্ষুদ্র এবং বৃন্তদেশ হৃদপিন্ডাকৃত। পাতা ভাঙলে সাদা সাদা আঠা বের হয়।
“শিবঠাকুরের গলায় দোলে বৈঁচি ফলের মালিকা
ওর গলায় দড়ি কে পরালো বলনা গৌরী বালিকা
আকন্দ ফুল বেশতো ছিল কর্ণে মনোহর
ধুতরোর ফুল এনে দিল নন্দী অনুচর...”
ওর গলায় দড়ি কে পরালো বলনা গৌরী বালিকা
আকন্দ ফুল বেশতো ছিল কর্ণে মনোহর
ধুতরোর ফুল এনে দিল নন্দী অনুচর...”
আকন্দ গাছ দু রকমের। একটার ফুল সবজে সাদা রঙের, অন্যটার ফুলের রং সাদাটে বেগুনি। সাদাটে বেগুনি আকন্দ গাছই বেশি দেখা যায়। এর পুষ্পদন্ড বহুশাখা বিশিষ্ট। আকন্দ ফুলে পাঁপড়ি থাকে ৫টি। পাঁপড়িগুলির অগ্রভাগ সূঁচালো এবং পাতার মতো ফুলের পাঁপড়িও বেশ পুরু। ফুলের ব্যাস ১-১.৫ ইঞ্চি। পাঁপড়ির মাঝে থাকে মুকুটের মত পাঁচটি পুংকেশর। পুংধানী প্রকট নয় ও গর্ভমুন্ডের সাথে যুক্ত এবং পুংদন্ড করোনায় রুপান্তরিত। ফুলে হালকা গন্ধ আছে। চৈত্র মাসে আকন্দগাছে ফুল আসে।
আকন্দের সবুজ রংয়ের ফল ধরে। ফল লম্বাটে, অগ্রভাগ দেখতে পাখির ঠোটের মত। লম্বায় ৩-৪ ইঞ্চি। ফলের ভেতর তুলো মতো আঁশ থাকে। এই আঁশ স্তরে স্তরে সাজানো থাকে থাকে। প্রতিটা স্তরের মাঝে একটা করে পাতলা বীজ থাকে। বীজের বর্ণ ধুসর কিংবা কালচে। বীজের গায়ে পাখনার মতো লেগে থাকে আঁশগুলো। পেকে যাওয়ার পর ফলগুলি ফেটে বাতাসে উড়ে দূরে চলে যায় আকন্দের বীজসহ আঁশ। আকন্দের ফল পাকে জৈষ্ঠ্য মাসে। ফল পাকার পর আকন্দ গাছ মারা যায়।
ফুলের সৌন্দর্য্যের পাশাপাশি আকন্দ গাছের মূল, ছাল, ফুল, পাতা, কাণ্ডের রস বিভিন্ন রোগে ঔষধি হিসেবে ব্যবহুত হয়ে আসছে প্রাচীন কাল থেকেই। পাতায় এনজাইম সমৃদ্ধ তরুক্ষীর বিদ্যমান। এতে আছে বিভিন্ন গ্লাকোসাইড,বিটা-এমাইরিন ও স্টিগমাস্টেরল আছে। আকন্দ বায়ুনাশক, বিষনাশক, উদ্দিপক, পাচক, শ্বেতী রোগ, ঘা, টিউমার, পাকস্থলীর ব্যথা, যকৃত ও পিত্তের রোগ এবং ফোলা নিবারক। এর রস ক্রিমিনাশক ও দাস্ত পরিষ্কারক। মূলের বাকল ঘাম বৃদ্ধিকারক, পরিবর্তক ও পেটের ব্যাথার টনিক এবং টিউমারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। আকন্দ প্লীহা, দাদ, শোথ, অর্শ, ক্রিমি, চুলের বিভিন্ন সমস্যা ও শ্বাসকষ্টে উপকারী। এর ফুল ডায়েবেটিস এর জন্যে বিশেষ কার্যকরী বলে মনে করা হয়। ভেষজ গুনের সাথে গাছটির বিভিন্ন অংশ বিষাক্তও বটে। গাছটির বিষাক্ত অংশ হলো পাতা ও গাছের কষ। কষ ভীষণ রেচক, গর্ভপাতক, শিশু হন্তারক। পাতা মানুষ হন্তারক বিষ।
“কতদিন সন্ধ্যার অন্ধকারে মিলিয়াছি আমরা দুজনে;
আকাশ প্রদীপ জ্বেলে তখন কাহারা যেন কার্তিকের মাস
সাজায়েছে, — মাঠ থেকে গাজন গানের স্নান ধোঁয়াটে উচ্ছ্বাস
ভেসে আসে; ডানা তুলে সাপমাসী উড়ে যায় আপনার মনে
আকন্দ বনের দিকে; একদল দাঁড়কাক ম্লান গুঞ্জরণে
নাটার মতন রাঙা মেঘ নিঙড়ায়ে নিয়ে সন্ধ্যার আকাশ
দু’মুহূর্ত ভরে রাখে — তারপর মৌরির গন্ধমাখা ঘাস
পড়ে থাক: লক্ষ্মীপেঁচা ডাল থেকে ডালে শুধু উড়ে চলে বনে”
আকাশ প্রদীপ জ্বেলে তখন কাহারা যেন কার্তিকের মাস
সাজায়েছে, — মাঠ থেকে গাজন গানের স্নান ধোঁয়াটে উচ্ছ্বাস
ভেসে আসে; ডানা তুলে সাপমাসী উড়ে যায় আপনার মনে
আকন্দ বনের দিকে; একদল দাঁড়কাক ম্লান গুঞ্জরণে
নাটার মতন রাঙা মেঘ নিঙড়ায়ে নিয়ে সন্ধ্যার আকাশ
দু’মুহূর্ত ভরে রাখে — তারপর মৌরির গন্ধমাখা ঘাস
পড়ে থাক: লক্ষ্মীপেঁচা ডাল থেকে ডালে শুধু উড়ে চলে বনে”
|| বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস ||
Kingdom :Plantae
Subkingdom :Viridiplantae
Infrakingdom :Streptophyta
Superdivision :Embryophyta
Division :Tracheophyta
Subdivision :Spermatophytina
Class :Magnoliopsida
Superorder :Asteranae
Order :Gentianales
Family :Apocynaceae
Genus :Calotropis
Species :Calotropis gigantea
Subkingdom :Viridiplantae
Infrakingdom :Streptophyta
Superdivision :Embryophyta
Division :Tracheophyta
Subdivision :Spermatophytina
Class :Magnoliopsida
Superorder :Asteranae
Order :Gentianales
Family :Apocynaceae
Genus :Calotropis
Species :Calotropis gigantea
Comments
Post a Comment