Skip to main content

Palash, পলাশ, Flame of the Forest, Parrot Tree (Butea frondosa)

Image result for Flame of the Forest, Parrot Tree (Butea frondosa)

Palash, পলাশ, Flame of the Forest, Parrot Tree (Butea frondosa)



পলাশ
বৈজ্ঞানিক নাম: Butea monosperma
পরিচিতি:
পলাশ মাঝারি আকারের পর্ণমোচী বৃক্ষ। শীতে গাছের পাতা ঝরে যায়। বসন্তে গাছ ফুলে ফুলে ভরে ওঠে। ফুল আগুন লাল। হলুদ ও লালচে কমলা রঙা পলাশ ফুলও আমরা দেখে থাকি। বাকল ধূসর। শাখা-প্রশাখা ও কাণ্ড আঁকাবাঁকা। নতুন পাতা রেশমের মতো সূক্ষ্ম। গাঢ় সবুজ পাতা ত্রিপত্রী, যার মানে হচ্ছে তিন পত্রকে একটি পাতা। হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকের মতে, পলাশের গাঢ় সবুজ ত্রিপত্রী হিন্দু দেবতা ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বরের প্রতীক। আবার বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কেউ কেউ মনে করেন পলাশ গাছের নিচে ভগবান গৌতম বুদ্ধের জন্ম হয়েছিল। আদি নিবাস ভারত উপমহাদেশ।
এক সময় ভারতের মণিপুরে পলাশ ফুলের টিস্যু হোলির রঙ তৈরিতে ব্যবহৃত হতো।

পলাশ
অন্যান্য নাম : পলাশ, কিংশুক, পলাশক, বিপর্ণক
ইংরেজি নাম : Flame of Forest, Bastard teak, Bengal kino tree, Parrot Tree
বৈজ্ঞানিক নাম : Butea monosperma
'পলাশের কুঁড়ি,
একরাত্রে বর্ণবহ্নি জ্বালিল সমস্ত বন জুড়ি।'
পলাশ আমাদের কাছের ফুল। বাঙালীর ফুল। ফাল্গুনের-বসন্তের ভালোবাসার ফুল। বিরহ-বিদ্রোহের প্রতীক। এই ফুলের আরো একটা নাম আছে - অরণ্যের অগ্নিশিখা। শীতের কশাঘাতে যখন পাতারা ঝরে যায়, রিক্ত পশাল গাছের কোলজুড়ে তখন আসে সহস্র রক্তিম পলাশ ফুল। তখন মনে হয়, বনে আগুন লেগেছে। নবীন পাতার সমারোহ তখন বনজুড়ে দেখে এই পলাশের বর্ণমিছিল। বাংলা সাহিত্যে পলাশের প্রভাব অতিশয়। গানে, কবিতায় কোথায় নেই পলাশ। তবে শুধু এ কালের সাহিত্য নয়, পলাশ সুপ্রাচীনকালেও ছিল সমান আদরণীয়। মহাভারতের সভাপর্বে ইন্দ্রপ্রস্থ নগরের যে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, সেখানে উদ্যান আর কৃত্রিম জলাধারের পাশেও ছিল পলাশ বৃক্ষের মাতামাতি। এমনকি দুই হাজারের বেশি বছর আগে লেখা কালিদাসের সংস্কৃত নাটক শকুন্তলায় বর্ণিত প্রমোদ উদ্যানে পলাশের উপস্থিতি রয়েছে। পলাশের জন্মস্থান বাংলাদেশ-ভারত হলেও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড, লাওস, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, মালয়শিয়া, নেপালেও জন্মে। শহরাঞ্চলে এ ফুল অপ্রচুর হলেও গ্রামেগঞ্জে প্রচুরই বলতে হবে।
পলাশ মাঝারি আকারের পর্ণমোচী বৃক্ষ, সাধারণত ২০ থেকে ৩০ ফুট উঁচু হতে পারে। কাণ্ড বহু শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত, আঁকা-বাঁকা ও গাঁটযুক্ত।বাকল স্থূল, অমসৃণ ও ধূসর। কাঠ নরম।গাছ খুব কষ্টসহিষ্ণু। বৃদ্ধি মন্থর। এই গাছ এতটাই ধীরে বড় হয় যে বছরে এর বৃদ্ধি এক ফুটও নয়।
পাতা যৌগিক, একান্তর বিন্যাসযুক্ত, তিনটি পত্রক নিয়ে গঠিত। পত্রক চামড়ার মতো পুরু, গাঢ় সবুজ, ডিম্বাকার, কিনারা মসৃন, ৮-১৫ সেমি লম্বা ও ৫-১২ সেমি চওড়া। নতুন পাতা রেশমের মতো সূক্ষ্ম।পাতা দেখতে অনেকটা মান্দার গাছের পাতার মতো হলেও আকারে বড়।
ফুল ফোটে বসন্তে, শীতকালে ঝরে যাওয়া পাতা জন্মানোর আগে। ফুল ফোটে, থোকা ধরে মঞ্জরীতে। পলাশ ফুলের পুস্পস্তবক ১৫ সেন্টিমিটার। ফুলের কুঁড়িগুলো রক্তিম, দেখতে বাঘের নখের মতো। ফুল দেখতে শিম ফুলের মত, গাঢ় কমলা রঙের, ৭.৫-১০ সে. মি লম্বা। পাঁপড়ির সংখ্যা ৫ টি। সামনে একটি চওড়া পাপড়ি, পেছনে দুটি ডানার মত ছড়ানো ও দুটি একত্রে বাঁকানো, পাখির ঠোঁটের মতো। বৃতি বাদামি, রোমশ এবং পাপড়ির রঙের সঙ্গে সুস্পষ্ট বৈসাদৃশ্যে আকর্ষণীয়।
ফল চ্যাপ্টা, ১৫-২০ সেমি লম্বা ও ৪-৫ সেমি চওড়া, একবীজীয়, রোমশ, শিরাচিহ্নিত, প্রথমে সবুজ এবং পরে হালকা হলুদ, পাতলা এবং বায়ুবাহী। বীজ ২.৫-৩ সেমি লম্বা, চেপ্টা, ডিম্বাকৃতি, লালের আভাযুক্ত ধূসরবর্ণ, বোঁটার দিকে একটু বসা।পলাশের পরাগায়ন মূলত পাখির দ্বারাই হয়ে থাকে। বীজ সহজেই অঙ্কুরিত হয়।
পলাশের বিভিন্ন অংশ ভেষজ ও অন্যান্য নানা কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। একসময় পলাশ গাছের শিকড় দিয়ে মজবুত দড়ি তৈরি করা হতো। পলাশের পাতা দিয়ে তৈরি হয় থালা, বাটি। ফুল থেকে যে হলুদ রঙ পাওয়া যায় তা দোলের রং তৈরিতে কাজে লাগে। আঠা অরেচক হিসেবে ও কোন কোন স্থানে নানান খাবার তৈরির জন্য বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। পলাশ বীজ পেটফাঁপা নিবারক, কৃমি ও অর্শরোগনাশক এবং চর্মরোগের প্রতিষেধক। পলাশের পাতা সঙ্কোচক, উদরাময়, অজীর্ন ও জ্বরে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কাঠ হোম ও উপনয়ন অনুষ্ঠানের উপকরণ বলে হিন্দু সমপ্রদায়ের কাছে পলাশ অত্যন্ত পবিত্র একটি গাছ। হিন্দু ধর্মমতে গাছের ত্রিপত্র ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিবের প্রতীক। সরস্বতী পূজোর অন্যতম প্রধান উপকরন এই পলাশ ফুল।
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
Kingdom: Plantae
Subkingdom: Viridiplantae
Infrakingdom: Streptophyta
Superdivision: Embryophyta
Division: Tracheophyta
Subdivision: Spermatophytina
Class: Magnoliopsida
Superorder: Rosanae
Order: Fabales
Family: Fabaceae
Genus: Butea
Species: Butea monosperma

ফুলের নাম- পলাশ
বৈজ্ঞানিক নাম- Butea monosperma
পরিবার- Fabaceae
অন্যান্য নাম- ঢাক ফুল, কিংশুক, Palah, Flame of the Forest, Bastard Teak, Parrot Tree, Keshu (Punjabi), Kesudo (Gujurati)
চমৎকার এই ফুলটি সম্পর্কে উদ্ভিদবিদ দ্বিজেন শর্মা তার “ফুলগুলি যেন কথা” বইতে লিখেছেন- “মাঝারি আকারের পত্রমোচী দেশী গাছ। তিনটি পত্রিকা নিয়ে যৌগিক পত্র। ফুল ফোটে বসন্তে। ফুল ৭.৫-১০ সে. মি. শিম ফুলের মত, গাঢ় কমলা, লম্বা মঞ্জুরীতে ঘনবদ্ধ থাকে। সারাগাছ ফুলেফুলে ভরে ওঠে। বীজ থেকে সহজেই চারা জন্মায়। বাড়েও দ্রুত।"
মূলত বসন্তে গাছগুলি যখন তাদের পাতা হারিয়ে দৃষ্টিকটুতায় আক্রান্ত হয়, তখনই প্রকৃতি তার আপন লীলায় মত্ত হয়ে দৃষ্টিকটু গাছে উজ্জ্বল লাল বা গাড় কমলা রং এর এই পলাশ ফুটিয়ে পলাশ গাছের আদর বাড়িয়ে দেয়। পাতাহীন গাছের ডালের যত্রতত্র ফুটতে দেখা যায় পলাশকে। তাইতো রবীন্দ্রনাথ পলাশকে দেখে লিখেছিলেন,
“রাঙ্গা হাসি রাশি-রাশি অশোকে পলাশে,
রাঙ্গা নেশা মেঘে মেশা প্রভাত-আকাশে,
নবীন পাতায় লাগে রাঙ্গা হিল্লোল।"
পলাশের বিচি থেকে দেশীয় ভেষজ ঔষধ তৈরি করা হয়। একসময় পলাশ গাছের শিকড় দিয়ে মজবুত দড়ি তৈরি করা হতো। সেই সাথে পলাশের পাতা দিয়ে তৈরি হতো থালা। আজও কলকাতা সহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে এই পলাশ পাতার ছোট্ট বাটিতে ফুচকা বা পানিপুরি বিক্রি করা হয়।
তথ্যসূত্র- http://forum.projanmo.com/topic15425.html
ছবি- নেট

Comments

Popular posts from this blog

ডেইজি

ডেইজি বৈজ্ঞানিক নাম : Bellis perenni পরিচিতি: দেখতে সাদা, মাঝখানে হলুদ ছোট ছোট অসংখ্য পাপড়ি দিয়ে একটি চোখের মতো আকৃতি তৈরি করে। ডেই ডেইজি ফুলটি ভোর থেকেই ফোটে, একে বলা হয় “দিনের চোখ”। গুনাগুন: এর অনেক গুনাগুন রয়েছে, যেমন খাদ্য হিশেবে ডেইজি ফুলের পাতা সালাদের সাথে খাওয়া যায়, এর পাতার মধ্যে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। ওষুধি গুনের দিক থেকে রক্তক্ষরণ কমানো, বদহজম এবং কফ কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। মৌমাছি ডেইজি ফুল খুব ভালবাসে এবং মধু তৈরিতে ভাল ভুমিকা রাখে।

কুঞ্জলতা

|| কুঞ্জলতা || অন্যান্য নাম : কুঞ্জলতা, কামলতা, তারালতা, তরুলতা, গেইট লতা, সূর্যকান্তি, জয়ন্তী ফুল। ইংরেজি নাম : Cypress Vine, Cypressvine Morning Glory, Cardinal Creeper, Cardinal Climber, Cardinal Vine, Star Glory, Hummingbird Vine, Cupid's flower বৈজ্ঞানিক নাম : Ipomoea quamoclit কুঞ্জলতা একপ্রকার বর্ষজীবী লতা জাতীয় উদ্ভিদ। এর আদি নিবাস ক্রান্তীয় আমেরিকা হলেও এটি দুনিয়ার প্রায় সকল ক্রান্তীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়। অস্ট্রেলিয়া, ফিজি, ভিয়েতনাম, মেক্সিকো এবং আমাদের দেশেও ব্যাপক ভাবে এর দেখা মেলে। কুঞ্জলতা সাধারণত ১-৩ মিটার লম্বা হয়। কান্ড নরম সবুজ, সহজেই ভেঙে যায় তবে পরিনত হলে বাদামি রঙের ও তুলনায় পোক্ত হয়ে থাকে। এর কান্ড বল্লী ধরনের অর্থাৎ এদের কোন আকর্ষ থাকে না তাই কান্ডের সাহায্যে কোন অবলম্বন কে জড়িয়ে ওপরে ওঠে। কুঞ্জলতার পাতা গাঢ় সবুজ রঙের। পাতা সরল, একান্তর ভাবে সজ্জিত। পাতাগুলি ৫ – ৭.৫ সেমি লম্বা। পত্রকিনারা পালকের মতো গভীরভাবে খন্ডিত, পাতার প্রত্যেক পাশে ৯-১৯টি করে খন্ড থাকে। এরূপ খন্ডনের কারনে পাতাগুলিকে দেখতে লাগে অনেকটা ফার্ণের মত। ঘনভাবে লতানো কুঞ্জলতার পাতাও

সোনাঝুরি

সোনাঝুরি A cluster of flowers at the end of the blooming season. Acacia auriculiformis Family Fabaceae Khoai near Shantiniketan, West Bengal, India আকাশমণি অন্যান্য নাম : আকাশমণি, সোনাঝুরি ইংরেজি নাম : Auri, Earleaf Acacia, Earpod Wattle, Northern Black Wattle, Papuan Wattle, Tan Wattle বৈজ্ঞানিক নাম : Acacia auriculiformis আকাশমণি একটি দ্রুতবৃদ্ধিসম্পন্ন চিরহরিৎ বৃক্ষ। এটি অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও পাপুয়া নিউ গিনির স্থানীয় প্রজাতি। চিরসবুজ এই বৃক্ষটি ১৫-৩০মি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। কান্ড বহু শাখাপ্রশাখা যুক্ত। গাছের বাকল পরিণত অবস্থায় ছাই, বাদামি বা কালচে বাদামি রঙের এবং অমসৃণ ও ফাটল যুক্ত হয়। এই গাছের যেটাকে আমরা অনেকেই পাতা বলি সেটি আসলে পাতা নয়, এটি মূলত পর্ণবৃন্ত। বীজ অঙ্কুরিত হবার পর পক্ষল যৌগিক পত্র ধারণ করে, কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই পত্রকগুলি ঝরে পড়ে। এর পর যৌগিক পত্রের বৃন্ত পরিবর্তিত হয়ে প্রসারিত, চ্যাপ্টা পাতার মত আকার ধারণ করে ও পাতার মত কাজ করে। সবুজ পর্ণবৃন্তগুলি ৮-২০ সেমি লম্বা ও ১-৪ সেমি চওড়া এবং মসৃণ। প্রতি পর্ণবৃন্তে ৩-৮ টি সমান্তরাল ভাবে অবস্থিত