Skip to main content

Kaash, কাশ, Kans grass (Saccharum spontaneum)

Image result for Kans grass (Saccharum spontaneum)

Kaash, কাশ, Kans grass (Saccharum spontaneum)

কাশফুল
বৈজ্ঞানিক নাম: Saccharum spontaneum
পরিচিতি:
শরতের বড় আকর্ষণ কাশফুল। এটি Gramineae পরিবারের অন্তর্গত। কাশ তৃণ বা ঘাস জাতীয় ফুলগাছ। কাশের আদি নিবাস ভারত ও বাংলাদেশ। কাশগাছ ১০ থেকে ১৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। শরৎকালে কাশগাছে সাদা ও রুপালি রঙের ফুল ফোটে। কাশফুল পালকের মতো নরম। গাছটির চিরল পাতার দুই পাশ খুবই ধারালো। কাশগাছের পাতা ও কাণ্ড থেকে কাগজ তৈরি হয়। বাংলাদেশে নদীর তীর, বিল-হাওর, আবারিত মাঠ, চরাঞ্চল, পাহাড়, উঁচু জমি ও ভারতের গয়া অঞ্চলজুড়ে শরৎকালে কাশফুল ফুটতে দেখা যায়। কাশফুল একধরনের ঘাসজাতীয় জলজ উদ্ভিদ।

''ভেবেছিলাম প্রথম যেদিন ফুটবে তুমি দেখব,
তোমার পুষ্প বনের গাঁথা মনের মতো লিখব।
তখন কালো কাজল মেঘ তো ব্যস্ত ছিল ছুটতে,
ভেবেছিলাম আরো ক’দিন যাবে তোমার ফুটতে।
সবে তো এই বর্ষা গেলো শরৎ এলো মাত্র,
এরই মধ্যে শুভ্র কাশে ভরলো তোমার গাত্র।
ক্ষেতের আলে, নদীর কূলে পুকুরের ঐ পাড়টায়,
হঠাৎ দেখি কাশ ফুটেছে বাঁশবনের ঐ ধারটায়!
আকাশ থেকে মুখ নামিয়ে মাটির দিকে নুয়ে,
দেখি ভোরের বাতাসে কাশ দুলছে মাটি ছুঁয়ে।
কিন্তু কখন ফুটেছে তা কেউ পারে না বলতে,
সবাই শুধু থমকে দাঁড়ায় গাঁয়ের পথে চলতে।
পুচ্ছ তোলা পাখির মতো কাশবনে এক কন্যে,
তুলছে কাশের ময়ূর চূড়া কালো খোঁপার জন্যে।
যেন শরত-রানী কাশের বোরখাখানি খুলে,
কাশবনের ঐ আড়াল থেকে নাচছে দুলে-দুলে।
প্রথম কবে ফুটেছে কাশ সেই শুধু তা জানে,
তাই তো সে তা সবার আগে খোঁপায় বেঁধে আনে।
ইচ্ছে করে ডেকে বলি: ‘ওগো কাশের মেয়ে,
আজকে আমার চোখ জুড়ালো তোমার দেখা পেয়ে।
তোমার হাতে বন্দী আমার ভালোবাসার কাশ,
তাই তো আমি এই শরতে তোমার ক্রীতদাস।’
ভালোবাসার কাব্য শুনে কাশ ঝরেছে যেই,
দেখি আমার শরত-রানী কাশবনে আর নেই।''
~কাশফুলের কাব্য - নির্মলেন্দু গুণ
ফুলের নাম- কাশ, Kans grass
বৈজ্ঞানিক নাম- Saccharum spontaneum
পরিবার- Poaceae
আমাদের নিজস্ব সম্পদ। কাশফুলের জন্মস্থান বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্থান, শ্রীলংকা, নেপাল, ভূটান, মালদ্বীপে। ঘাসজাতীয়, আখ বা ইক্ষুর আত্মীয়। আমাদের দেশে শরৎ মানেই কাশ আর শিউলি ফুল। নদী তীরবর্তী স্থান কাশ জন্মানোর আদর্শ স্থান হলেও এখন প্রায় সব জায়গাতেই জন্মাতে দেখা যায়।
বর্ষার বৃষ্টি বা বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর কাশের ঘাস জন্মে আর শরতে ফোঁটে শুভ্র, সাদা ফুল। কাশ খুব দ্রুত জন্মে নিজেদের একটা কলোনী তৈরি করে, যা কাশবন নামেই আমাদের কাছে পরিচিত। ঢাকায় আফতাব নগর, দিয়াবাড়িতে আছে কাশবন।
কাশ যেহেতু আখ(Saccharum officinarum) এর আত্মীয় সেহেতু আখের কিছুটা গুণ এর মধ্যেও আছে। কাশ ঘাসের গোড়ার দিকের অংশ মিষ্টি স্বাদের। ফিলিপাইনে এর মূলের রস ডাইইউরেটিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। মূলের রস বা জ্যুস জ্বর সারাতে পারে। এছাড়া মূলের রসের সংকোচক, উপশমকারী, শীতলকারক, বিরেচক, সবলকারক গুণ রয়েছে। ব্যথা কমাতে কান্ডের শাঁসের গরম সেঁক উপকারী।
পাশ্চাত্যে কাশফুল নেই। সেখানে কাশের মতো দেখতে Pampas grass(Cortaderia selloana) আছে।এই ঘাসগুলো হঠাৎ দেখে মনে হবে আমাদের দেশি কাশফুল। আসলে তা নয়। এরা অন্য গণের বাসিন্দা। এদের স্বভাব বৈশিষ্ট্য ও ভিন্ন। কাশের তুলনায় এই ফুলগুলো বেশ ঘন। ফুল সাদা বা ক্রিম কালার। হাইব্রিড জাত আছে গোলাপি, নীল ফুলের।

Comments

Popular posts from this blog

কুঞ্জলতা

|| কুঞ্জলতা || অন্যান্য নাম : কুঞ্জলতা, কামলতা, তারালতা, তরুলতা, গেইট লতা, সূর্যকান্তি, জয়ন্তী ফুল। ইংরেজি নাম : Cypress Vine, Cypressvine Morning Glory, Cardinal Creeper, Cardinal Climber, Cardinal Vine, Star Glory, Hummingbird Vine, Cupid's flower বৈজ্ঞানিক নাম : Ipomoea quamoclit কুঞ্জলতা একপ্রকার বর্ষজীবী লতা জাতীয় উদ্ভিদ। এর আদি নিবাস ক্রান্তীয় আমেরিকা হলেও এটি দুনিয়ার প্রায় সকল ক্রান্তীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়। অস্ট্রেলিয়া, ফিজি, ভিয়েতনাম, মেক্সিকো এবং আমাদের দেশেও ব্যাপক ভাবে এর দেখা মেলে। কুঞ্জলতা সাধারণত ১-৩ মিটার লম্বা হয়। কান্ড নরম সবুজ, সহজেই ভেঙে যায় তবে পরিনত হলে বাদামি রঙের ও তুলনায় পোক্ত হয়ে থাকে। এর কান্ড বল্লী ধরনের অর্থাৎ এদের কোন আকর্ষ থাকে না তাই কান্ডের সাহায্যে কোন অবলম্বন কে জড়িয়ে ওপরে ওঠে। কুঞ্জলতার পাতা গাঢ় সবুজ রঙের। পাতা সরল, একান্তর ভাবে সজ্জিত। পাতাগুলি ৫ – ৭.৫ সেমি লম্বা। পত্রকিনারা পালকের মতো গভীরভাবে খন্ডিত, পাতার প্রত্যেক পাশে ৯-১৯টি করে খন্ড থাকে। এরূপ খন্ডনের কারনে পাতাগুলিকে দেখতে লাগে অনেকটা ফার্ণের মত। ঘনভাবে লতানো কুঞ্জলতার পাতাও ...

সোনাঝুরি

সোনাঝুরি A cluster of flowers at the end of the blooming season. Acacia auriculiformis Family Fabaceae Khoai near Shantiniketan, West Bengal, India আকাশমণি অন্যান্য নাম : আকাশমণি, সোনাঝুরি ইংরেজি নাম : Auri, Earleaf Acacia, Earpod Wattle, Northern Black Wattle, Papuan Wattle, Tan Wattle বৈজ্ঞানিক নাম : Acacia auriculiformis আকাশমণি একটি দ্রুতবৃদ্ধিসম্পন্ন চিরহরিৎ বৃক্ষ। এটি অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও পাপুয়া নিউ গিনির স্থানীয় প্রজাতি। চিরসবুজ এই বৃক্ষটি ১৫-৩০মি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। কান্ড বহু শাখাপ্রশাখা যুক্ত। গাছের বাকল পরিণত অবস্থায় ছাই, বাদামি বা কালচে বাদামি রঙের এবং অমসৃণ ও ফাটল যুক্ত হয়। এই গাছের যেটাকে আমরা অনেকেই পাতা বলি সেটি আসলে পাতা নয়, এটি মূলত পর্ণবৃন্ত। বীজ অঙ্কুরিত হবার পর পক্ষল যৌগিক পত্র ধারণ করে, কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই পত্রকগুলি ঝরে পড়ে। এর পর যৌগিক পত্রের বৃন্ত পরিবর্তিত হয়ে প্রসারিত, চ্যাপ্টা পাতার মত আকার ধারণ করে ও পাতার মত কাজ করে। সবুজ পর্ণবৃন্তগুলি ৮-২০ সেমি লম্বা ও ১-৪ সেমি চওড়া এবং মসৃণ। প্রতি পর্ণবৃন্তে ৩-৮ টি সমান্তরাল ভাবে অবস্থিত...

ডেইজি

ডেইজি বৈজ্ঞানিক নাম : Bellis perenni পরিচিতি: দেখতে সাদা, মাঝখানে হলুদ ছোট ছোট অসংখ্য পাপড়ি দিয়ে একটি চোখের মতো আকৃতি তৈরি করে। ডেই ডেইজি ফুলটি ভোর থেকেই ফোটে, একে বলা হয় “দিনের চোখ”। গুনাগুন: এর অনেক গুনাগুন রয়েছে, যেমন খাদ্য হিশেবে ডেইজি ফুলের পাতা সালাদের সাথে খাওয়া যায়, এর পাতার মধ্যে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। ওষুধি গুনের দিক থেকে রক্তক্ষরণ কমানো, বদহজম এবং কফ কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। মৌমাছি ডেইজি ফুল খুব ভালবাসে এবং মধু তৈরিতে ভাল ভুমিকা রাখে।