ফ্লেম ভাইন বা Golden shower trumpet বা Orange bignonia
বৈজ্ঞানিক নাম পাইরোস্টেজিয়া ভেনুস্টা (Pyrostegia venusta).
অগ্নিশিখা লতার বাংলা নাম অনেকে অনেক রকম বলেন। কারোর কাছে কনকলতা, কারোর কাছে কমললতা। একজন আবার বলেছিলেন, গাজরলতা!
Pyrostegia শব্দটি এসেছে দুটি গ্রিক শব্দ থেকে। Pyro শব্দের অর্থ আগুন আর stegia হলো ছাদ অর্থাৎ ফুলের ওপরের অংশ অর্থাৎ পাপড়ি।
ফুলের নাম অগ্নিশিখা বলা যাবে না, কারণ রবি ঠাকুরের দেওয়া ওই নামে আরো একটি ফুল আছে। সে ফুল আক্ষরিক অর্থেই আগুনের শিখার মতো।
এসব কথায় কাজ নেই। অন্য কথা বলি।
আজ তখন একটু আগেই সকাল হয়েছে। শীতের আবেশমাখা নরম রঙিন রোদ এসে পড়েছে ফুলের বুকে। কত উজ্জ্বল দেখাচ্ছে ফুলগুলি। কাছে দাঁড়িয়ে দেখলে চোখে ধাঁধা লেগে যায়।
মাত্র ক'টি দিনের জন্য ফুলের এই বাঁধনহারা সৌন্দর্য।
শুধু লতায় নয়, ঝরে পড়া ফুলে গাছতলাটিও রাঙা হয়ে উঠেছে। সবুজ ঘাসে উজ্জ্বল কমলা ফুল, আহা সে কি এক অপূর্ব শোভা।
লতায় এখনো কিছু কুঁড়ি ফুটতে বাকি আছে। অন্তরে তাদের ভীষণ তাড়া। সবার সঙ্গে তারাও সামিল হতে চায়।
আমি চাই তারা যতদিন না ফোটে ততদিনই ভালো। ফুটলেই ফুরিয়ে যাবে যে!
-------------------------------------------------------------
-------------------------------------------------------------
বন্যার জলের মতো ফুটে ওঠা এই ফুলটির নাম অগ্নিশিখা। ইংরাজি নাম flame vine.
বৈজ্ঞানিক নাম Pyrostegia venusta.
এখন দিকে দিকে এই ফুল ফুটে উঠেছে, বাড়ির রেলিংয়ে, ছাদের আলসেয়, গেটের মাথায়, পাঁচিলে। বাড়িঘর, বাগান সব আলো হয়ে আছে।
অগ্নিশিখার কমলা-লাল রঙের কুঁড়িগুলি দেখতে ছোট্ট মুগুরের মতো। এর ফুটে ওঠার পদ্ধতিটি ভারী সুন্দর। কুঁড়ি চারটি খন্ডে ছড়িয়ে গিয়ে ফুল হয়ে ফুটে ওঠে। ওই চারটি খণ্ডের মাথার দিকের খণ্ডটি আবার মাঝখানে চেরা। সে এক শোভা।
ফুলের বুকে চারটি পুংদন্ড, সেগুলিরও মাঝখানে চেরা। তাদের মাথায় পরাগধানী। ফুল ফোটার সময় তারা দন্ডের সমান্তরাল থাকে। আলো পড়লেই একটু একটু করে সোজা হয়ে দাঁড়ায়। তখন এদের সাপের চেরা জিভের মতো দেখায়।
আর ওই চারটি পুংদন্ডের মাঝখানে থাকে একটিমাত্র গর্ভদন্ড। দৈর্ঘ্যে সেটিই সবচেয়ে লম্বা। পরাগমিলন সম্পন্ন হলে, ফুলের পাপড়ি যেমন ঝরে যায়, তেমনি ঝরে পড়ে পুংদন্ডগুলি। কিন্তু ওই গর্ভদন্ডটি বৃতির গোড়ায় রয়ে যায়। তখন গাছটি দেখলে মায়া হয়।
ক'দিন আগের আগুন ঝরানো লতা তখন রিক্ত, নিঃশেষিত। মৌমাছির গুঞ্জন আর শোনা যায় না, মৌটুসী আর আসে না। সবুজ পাতাভরা লতাটি দেখে চেনাই যায় না এরই শাখায় শাখায় কি ব্যস্ততা চলেছিল ক'দিন।
আমি তখন ও আগের মতোই গাছের কাছে যাই, লতায় পাতায় হাত বুলিয়ে বলি, এই দেখ, আমি এসেছি।
-----------------------------------------------------------------
-----------------------------------------------------------------
সোনাঝুরি লতা
অন্যান্য নাম : সোনাঝুরি লতা
ইংরেজি নাম : Flame Vine, Golden Shower, Orange Trumpet Creeper
বৈজ্ঞানিক নাম : Pyrostegia venusta
ইংরেজি নাম : Flame Vine, Golden Shower, Orange Trumpet Creeper
বৈজ্ঞানিক নাম : Pyrostegia venusta
চলার পথে কোন কোন বাড়ির দেয়াল বেয়ে ওঠা বা প্রাচীর ঢেকে দেওয়া উজ্জ্বল কমলা রঙের ফুলের বাহারে আমাদের অনেকেরই চোখ টেনে নেয় যে লতা তার নাম সোনাঝুরি লতা। Pyrostegia এই গ্রীক শব্দটির ‘আগুনে ঢাকা ছাদ’। লালচে কমলা রঙের ফুলে যখন পুরো গাছ ভরে থাকে তখন সত্যিই তাই মনে হয়। আদি নিবাস দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও বলিভিয়া। বাগান বা বাড়ি সাজাতে অনবদ্য হওয়ার কারনে সেসব জায়গা থেকে ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে।
সোনাঝুরি লতা ক্রান্তীয়, বহুবর্ষজীবী, নমনীয় কিন্তু কাষ্ঠল, চিরসবুজ, ঝুলন্ত শাখাবহুল লম্বা লতা। খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। না ছেঁটে দিলে আকর্ষের সাহায্যে অনায়াসে ২৫-৩০ মি পর্যন্ত উঠে যেতে পারে।
পাতা এক পক্ষল যৌগিক, অভিমুখি এবং হালকা থেকে গাঢ় সবুজ রঙের। প্রতি পাতা ২-৩ টি পত্রক যুক্ত। কখন কখন মাঝের পত্রকটি শীর্ষ ভাগে তিন অংশে বিভক্ত আকর্ষে পরিণত হয়। পত্রকগুলি ডিম্বাকার, মসৃণ এবং ৪-৭ সেমি লম্বা।
সোনাঝুরি লতার উজ্জ্বল লালচে কমলা রঙের ফুল অনেক দূর থেকেই আমাদের নজর কাড়ে। প্রস্ফুটনকাল শীত-বসন্ত হলেও আমাদের দেশে শীতের প্রারম্ভেই ফুল ফোটে এবং এ শোভা দীর্ঘস্থায়ী। লতার ঝাড় তখন সোনালী ফুলে ভরে যায়। বসন্তে ফুটলেও তা বিক্ষিপ্ত। শাখার শীর্ষে একসাথে মঞ্জরিতে প্রায় ১৫-২০ টি ফুল গুচ্ছাকারে ঝুলতে থাকে। ফুলগুলো নলাকার, প্রায় ৭.৫ সেমি লম্বা। মুক্ত প্রান্ত ৫ লতিতে বিভক্ত এবং বাঁকা। গর্ভদন্ড লম্বা, কমলা রঙের ৪ টি পুংকেশরের ২ টি লম্বা ও ২ টি আকারে খাটো। ফুল গন্ধহীন। ফল নলাকার প্রায় ৩০ সেমি লম্বা। ফলগুলি অনেক পক্ষল বীজে পরিপূর্ণ থাকে। বংশবৃদ্ধি দাবাকলমে।
সোনাঝুরি লতা সাধারণত উদ্যান সজ্জার গাছ হিসাবেই বেশি পরিচিত। তবে ডায়েরিয়া, জ্বর, ঠান্ডা লাগা বা ফুসফুসের সংক্রমনে এর পাতার ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
Kingdom Plantae
Subkingdom Viridiplantae
Infrakingdom Streptophyta
Superdivision Embryophyta
Division Tracheophyta
Subdivision Spermatophytina
Class Magnoliopsida
Superorder Asteranae
Order Lamiales
Family Bignoniaceae
Genus Pyrostegia
Species Pyrostegia venusta
Subkingdom Viridiplantae
Infrakingdom Streptophyta
Superdivision Embryophyta
Division Tracheophyta
Subdivision Spermatophytina
Class Magnoliopsida
Superorder Asteranae
Order Lamiales
Family Bignoniaceae
Genus Pyrostegia
Species Pyrostegia venusta
ফুলের নাম- সোনাঝুরিলতা
বৈজ্ঞানিক নাম-Pyrostegia venusta
পরিবার-Bignoniaceae
অন্যান্য নাম- Flame Vine, Golden Shower, Orange Trumpet Creeper
ব্রাজিলের প্রজাতি, ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে। নমনীয়, পত্রমোচী, ঝুলন্ত শাখাবহুল লম্বা লতা। শীত ও বসন্তে ফুল ফোটে। নিষ্পত্র লতার ঝাড় তখন সোনালী ফুলে ভরে যায়। ঢাকায় হাতেগোনা কয়েকটি স্থানে চোখে পড়ে। রমনা পার্ক, মিরপুর জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান, ফুলার রোডে ব্রিটিশ কাউন্সিল প্রাঙ্গণ ও বলধা গার্ডেনে কয়েকটি গাছ আছে। তবে কারও কারও ব্যক্তিগত সংগ্রহেও দু-একটি গাছ দেখা যায়।
ফুলটির উজ্জ্বল লালচে কমলা রঙ অনেক দূর থেকেই আমাদের নজর কাড়ে। প্রস্ফুটনকাল শীত-বসন্ত হলেও আমাদের দেশে শীতের প্রারম্ভেই ফুল ফোটে এবং এ শোভা দীর্ঘস্থায়ী। বসন্তে ফুটলেও তা বিক্ষিপ্ত। গাছ একটানা প্রায় ৭৫ মিটার পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে। যৌগপত্র ১-পক্ষল, জোড়পক্ষ, ওপর মসৃণ, ৪ থেকে ৭ সেমি লম্বা, শীর্ষ পত্রিকা শাখায়িত এবং আকষীতে রূপান্তরিত। ঝুলন্ত মঞ্জরির ফুলগুলো নলাকার, প্রায় ৫ সেমি লম্বা, কিছুটা বাঁকা, মুখ বিভক্ত, গন্ধ নেই। ফুল ফোটা শেষ হলে শুকনো ডালপালা ও ডাঁটা ছেঁটে ফেলা ভালো। বংশবৃদ্ধি দাবাকলমে। জন্মস্থান ক্রান্তীয় আমেরিকা।
ছবি- নেট
Comments
Post a Comment