Skip to main content

বনচন্ডাল

বনচন্ডাল
৪। ফুলের নাম : দাদমর্দন

Candle Bush, Empress Candle Plant, Seven Golden Candlesticks, Candlestick Cassia, Candlestick Senna, Christmas Candle, Ringworm Cassia, Ringworm Bush, Gelenggang, Daun Kurap ইত্যাদি।

Senna alata

Image result for senna alata

Image result for senna alata

শালিমারে যেখানে এককালে স্বর্ণময়ী ঝিল ছিল, বুজিয়ে ফেলার পর এখন তা আবর্জনাক্লিষ্ট একটি পতিত জমি। তবে শীঘ্রই এটি সংস্কৃত হয়ে নতুন স্টেশনের কাজে লেগে যাবে।
সেই জমিতে বহুবছর ধরে এই ফুল দেখে আসছি। গতকাল ছবি তুললাম। এর কথা বলি।
এই ফুলগুলোর নাম সেভেন গোল্ডেন ক্যান্ডলস্টিকস/এমপারারর্স ক্যান্ডলস্টিকস/খৃস্টমাস ক্যান্ডলস্টিকস ইত্যাদি। দাদ জাতীয় চর্মরোগ নিরাময় বা প্রতিরোধ বা প্রতিষেধক গুণের জন্য এর আরেক নাম ringworm shrub, বাংলায় দাদমর্দন বা দাদমারি। বৈজ্ঞানিক নাম Senna Alata বা ক্যাসিয়া আলাটা।
এর ফলগুলি শুঁটির মতো, ভিতরে ৫০/৬০ টি তিনকোণা চ্যাপ্টা বীজ থাকে। সাংঘাতিক তাদের জীবনীশক্তি। যে কোনো প্রতিকূল অবস্থাতেও অঙ্কুরিত হয়।
রেল লাইনের ধারে, পরিত্যক্ত ভিজে জায়গায় এই গাছ অপ্রতিরোধ্যভাবে বেড়ে চলে। আর ঠিক তখনই এর আসল রূপ। একদম খাঁটি সোনার রঙ আর পুষ্পবৃন্তের সবচেয়ে লম্বাটিকে মাঝে রেখে পাশে অন্য স্তবকগুলি ক্রমান্বয়ে নিচের দিকে ফুটে ওঠে, অনেকটা বাতিদান বা victory stand এর মতো। সেই থেকেই এই নাম।
আমাদের national emblem যেমন অশোক স্তম্ভের সিংহ, তেমনি ইহুদীদের দেশ ইসরায়েলের এমব্লেম হলো এই সেভেন গোল্ডেন ক্যান্ডলস্টিকস।
এর নামকরণের একটি গল্প আছে।
ইহুদীদের আদি পুরুষ ছিলেন আব্রাহাম। তাঁর প্রবর্তিত ধর্মের প্রথম প্রফেট হলেন মোজেস। তিনি মিশরীয় রানীর দত্তক পুত্র হিসাবে বড়ো হন এবং পরবর্তীকালে হিব্রু ছাড়াও খ্রিষ্টান, ইসলাম, বাহাই ইত্যাদি ধর্মমতের আদি পুরুষ হিসাবে স্বকৃতি লাভ করেন।
তিনি যখন আফ্রিকা মহাদেশ থেকে এশিয়া ভূখণ্ডে এলেন তখন তাঁর সঙ্গী ছিল একটি বাতিদান বা প্রজ্বলিত সপ্তপদী। এশিয়া মাইনরের দুর্গম নির্জনে তিনি এই প্রজ্বলিত অগ্নি স্থাপন করে ঈশ্বরের আরাধনা করতে থাকেন। সেই আগুন একদিন Judaism এর প্রতীক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। তাঁরা অগ্নি-উপাসক।
সে যাক। তার বহু পরে জেরুজালেমে মন্দির প্রতিষ্ঠিত হলে ঈশ্বরের প্রতীক হিসেবে সেই সোনার বাতিদান বা তার অগ্নি পূজিত হতে থাকে। শোনা যায় সেই বাতিদান ২৪ ক্যারাট খাঁটি সোনায় নির্মিত এবং তার ওজন ছিল প্রায় ৪৫ কেজি।
হিব্রু বাইবেলে আছে, সেন্ট জন বলছেন, " And I turned to see the voice that was speaking with me. And having turned, I saw seven lampstands." অর্থাৎ, সেই বাতিদানই হলো স্বয়ং ঈশ্বর।
সেন্ট জন আরো বলেছেন, ".....And I heard behind me a loud voice like the sound of a trumpet, saying, 'Write in a book what you see, and send it to the seven churches : to Ephesus and to Smyrna and to Pergamum and to Thyatira and to Sardis and to Philadelphia and to Laodicea."
আমাদের দেশে মহাভারতের যুগে যেমন ষোড়শ মহাজনপদ ছিল, ওদেশে তেমনি ছিল সাতটি রাজ্য যেখানে সমমনস্ক মানুষ যাঁরা একই দেবতায় বিশ্বাস করেন ও একই কর্মে নিযুক্ত থাকেন, তাঁরা বসবাস করতেন। তখনকার দিনে সেই রাজ্য গুলিকে বলা হতো church. যুগে যুগে অর্থ বদল হয়ে আজ আমরা চার্চ বলতে ইট পাথরে গড়া একটি ইমারত বা ভবনকে বুঝি, যেখানে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা জানানো হয়, তাঁর বন্দনা করা হয়।
সে যাক।
তখনকার দিনে সেদেশে ৭ (সাত) অঙ্কটি ছিল পবিত্রতার প্রতীক, ছিল সম্পূর্ণতার প্রতীক। ঈশ্বর সর্বদাই perfect, সর্বদাই absolute, তাই বাতিদানের অগ্নিশিখা সাতটি।
সোনাও তেমনি শুধু মহার্ঘ্য নয়, সে বিশুদ্ধতারও প্রতীক। তাই বাতিদান হেমময়।
৪৫৫ অব্দে ভ্যান্ডালরা মোজেসের সেই বাতিদানটি লুট করে তাদের রাজধানী কার্থেজে নিয়ে যায়। তারও প্রায় একশ বছর পর বাইজেন্টাইন সৈন্য ৫৩৩ অব্দে তা উদ্ধার করে কনস্টান্টিনোপোলে নিয়ে আসে এবং পরে জেরুজালেমের মন্দিরে ফিরিয়ে দেয়। কথিত আছে, ৬১৪ অব্দে পারস্যের সৈন্যরা সেটি লুন্ঠন করে ধ্বংস করে ফেলে।
তাই আজ আর সে বাতিদান দেখার উপায় নেই। তবে অন্ততঃ দশটি ধর্মমতের মানুষ এই বাতিদানকেই ঈশ্বর মনে করে আজও পূজা করে। তাই সেই সব মন্দিরে আজও তার প্রতিরূপ দেখা যায়।
ভারতে পার্শিরা অগ্নিউপাসক। কলকাতায় তাদের অগ্নি মন্দির আছে। সেখানে সোনার সপ্তবাতিদান আছে।

Comments

Popular posts from this blog

ডেইজি

ডেইজি বৈজ্ঞানিক নাম : Bellis perenni পরিচিতি: দেখতে সাদা, মাঝখানে হলুদ ছোট ছোট অসংখ্য পাপড়ি দিয়ে একটি চোখের মতো আকৃতি তৈরি করে। ডেই ডেইজি ফুলটি ভোর থেকেই ফোটে, একে বলা হয় “দিনের চোখ”। গুনাগুন: এর অনেক গুনাগুন রয়েছে, যেমন খাদ্য হিশেবে ডেইজি ফুলের পাতা সালাদের সাথে খাওয়া যায়, এর পাতার মধ্যে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। ওষুধি গুনের দিক থেকে রক্তক্ষরণ কমানো, বদহজম এবং কফ কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। মৌমাছি ডেইজি ফুল খুব ভালবাসে এবং মধু তৈরিতে ভাল ভুমিকা রাখে।

কুঞ্জলতা

|| কুঞ্জলতা || অন্যান্য নাম : কুঞ্জলতা, কামলতা, তারালতা, তরুলতা, গেইট লতা, সূর্যকান্তি, জয়ন্তী ফুল। ইংরেজি নাম : Cypress Vine, Cypressvine Morning Glory, Cardinal Creeper, Cardinal Climber, Cardinal Vine, Star Glory, Hummingbird Vine, Cupid's flower বৈজ্ঞানিক নাম : Ipomoea quamoclit কুঞ্জলতা একপ্রকার বর্ষজীবী লতা জাতীয় উদ্ভিদ। এর আদি নিবাস ক্রান্তীয় আমেরিকা হলেও এটি দুনিয়ার প্রায় সকল ক্রান্তীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়। অস্ট্রেলিয়া, ফিজি, ভিয়েতনাম, মেক্সিকো এবং আমাদের দেশেও ব্যাপক ভাবে এর দেখা মেলে। কুঞ্জলতা সাধারণত ১-৩ মিটার লম্বা হয়। কান্ড নরম সবুজ, সহজেই ভেঙে যায় তবে পরিনত হলে বাদামি রঙের ও তুলনায় পোক্ত হয়ে থাকে। এর কান্ড বল্লী ধরনের অর্থাৎ এদের কোন আকর্ষ থাকে না তাই কান্ডের সাহায্যে কোন অবলম্বন কে জড়িয়ে ওপরে ওঠে। কুঞ্জলতার পাতা গাঢ় সবুজ রঙের। পাতা সরল, একান্তর ভাবে সজ্জিত। পাতাগুলি ৫ – ৭.৫ সেমি লম্বা। পত্রকিনারা পালকের মতো গভীরভাবে খন্ডিত, পাতার প্রত্যেক পাশে ৯-১৯টি করে খন্ড থাকে। এরূপ খন্ডনের কারনে পাতাগুলিকে দেখতে লাগে অনেকটা ফার্ণের মত। ঘনভাবে লতানো কুঞ্জলতার পাতাও

সোনাঝুরি

সোনাঝুরি A cluster of flowers at the end of the blooming season. Acacia auriculiformis Family Fabaceae Khoai near Shantiniketan, West Bengal, India আকাশমণি অন্যান্য নাম : আকাশমণি, সোনাঝুরি ইংরেজি নাম : Auri, Earleaf Acacia, Earpod Wattle, Northern Black Wattle, Papuan Wattle, Tan Wattle বৈজ্ঞানিক নাম : Acacia auriculiformis আকাশমণি একটি দ্রুতবৃদ্ধিসম্পন্ন চিরহরিৎ বৃক্ষ। এটি অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও পাপুয়া নিউ গিনির স্থানীয় প্রজাতি। চিরসবুজ এই বৃক্ষটি ১৫-৩০মি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। কান্ড বহু শাখাপ্রশাখা যুক্ত। গাছের বাকল পরিণত অবস্থায় ছাই, বাদামি বা কালচে বাদামি রঙের এবং অমসৃণ ও ফাটল যুক্ত হয়। এই গাছের যেটাকে আমরা অনেকেই পাতা বলি সেটি আসলে পাতা নয়, এটি মূলত পর্ণবৃন্ত। বীজ অঙ্কুরিত হবার পর পক্ষল যৌগিক পত্র ধারণ করে, কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই পত্রকগুলি ঝরে পড়ে। এর পর যৌগিক পত্রের বৃন্ত পরিবর্তিত হয়ে প্রসারিত, চ্যাপ্টা পাতার মত আকার ধারণ করে ও পাতার মত কাজ করে। সবুজ পর্ণবৃন্তগুলি ৮-২০ সেমি লম্বা ও ১-৪ সেমি চওড়া এবং মসৃণ। প্রতি পর্ণবৃন্তে ৩-৮ টি সমান্তরাল ভাবে অবস্থিত